শেয়ারবাজারে কারসাজি তদন্তের চিঠি এক রাতেই প্রত্যাহার

অর্থনীতি

স্বদেশবাণী ডেস্ক: শেয়ারবাজারে কারসাজির তদন্ত সংক্রান্ত চিঠি এক রাতেই প্রত্যাহার করল নিয়ন্ত্রকসংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটির অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এর ফলে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি কিংবা আয় বাড়িয়ে দেখালেও এর তদন্তের বাধ্যবাধকতা থাকল না, যা বাজারের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করল।

এ ব্যাপারে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, বাজারের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এটি বাতিল হয়নি। আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। কিছু সংশোধন করে পরবর্তীতে আবারও চিঠি দেয়া হতে পারে।

শেয়ারবাজারে কারসাজি চিহ্নিত করতে মঙ্গলবার স্টক এক্সচেঞ্জকে চিঠি দেয় বিএসইসি। এই চিঠির মূল বক্তব্য ছিল, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করলে তার কারণ চিহ্নিত করা। পাশাপাশি শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস), লেনদেন ও মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশের আগে পরে কোম্পানির দর কেমন থাকে তাও নজরে আনার নির্দেশনা ছিল।

এ ব্যাপারে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি কমিশনকে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সামগ্রিকভাবে বিষয়টি ছিল একটি গাইড লাইন। তবে এ চিঠির পর বুধবার বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম কিছুটা কমে যায়। এরপর বিকালে সার্কুলারটি প্রত্যাহার করে নেয় বিএসইসি।

জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে বেশ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। কোম্পানির উদ্যোক্তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী। এসব কোম্পানির শেয়ারের মূল্য কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠানগুলোর মৌলভিত্তির সঙ্গে যায় না। বেশ কয়েকটি হাউজ এবং উদ্যোক্তারা এর সঙ্গে জড়িত। প্রথমে উদ্যোক্তাদের পক্ষ বিভ্রান্তিকর মূল্য সংবেদনশীল তথ্য দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে হাউজগুলো থেকে অস্বাভাবিকভাবে শেয়ার কিনে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে শেয়ারের দাম বাড়ানো হচ্ছে। যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর। এ অবস্থায় বিএসইসির পদক্ষেপের অপেক্ষা করছিল বাজার সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু এ ব্যাপারে একটি সার্কুলার দিয়ে পরেরদিনই তা প্রত্যাহার করে নেয়।

মঙ্গলবার দেয়া বিএসইসির চিঠিতে ৪টি নির্দেশনা ছিল। এগুলো হল- ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দর ৫০ শতাংশের বেশি উঠা-নামা করেছে, তার পেছনে কোনো কারসাজি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। দ্বিতীয়ত, গত বছরের তুলনায় এ বছর যেসব কোম্পানির ইপিএস ৫০ শতাংশের বেশি পরিবর্তন হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে। তৃতীয়ত, গত এক মাসে যে সব কোম্পানির গড় লেনদেন আগের ৬ মাসের চেয়ে ৫ গুণের বেশি বেড়েছে, তারও কারণ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সবশেষে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশের আগের ১০ কার্যদিবসে, যেসব কোম্পানির দাম ও লেনদেন ৩০ শতাংশের কম-বেশি হয়েছে, সেসব কোম্পানির বিষয়েও তদন্ত করতে হবে। অর্থনীতিবিদরা বলেছিলেন, বিষয়টি ইতিবাচক। এতে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *