শুক্রবার (১ জুলাই) বিকেলে ধানমন্ডিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। এর আগে ইভ্যালির বর্তমান বোর্ডের সদস্যরা সেখানে সংবাদ সম্মেলন করেন।
ওই খবরে জড়ো হয় গ্রাহকরা। এরপরই সেখানে রাসেলের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের দাবি, মো. রাসেলকে মুক্তি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দিলে ইভ্যালি ঘুরে দাঁড়াবে। গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পাবেন।
তাদের মতে, ইভ্যালির রাসেল জেলে যাবার পর থেকে দায়িত্ব নেয়া বোর্ড যে পরিমাণ সময় নিয়েছে, তাতে কোনো কাজ হয়নি। উল্টো এসময় রাসেল পেলে ব্যবসা নতুন করে শুরু করতে পারতেন। গ্রাহক-মার্চেন্টরা টাকা ফেরত পেতেন।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং তার স্বামী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে আরিফ বাকের নামে এক ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দুজনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ের এ-সংক্রান্ত কমিটি।
গত বছরের ১৩ আগস্ট ইভ্যালিকে চিঠি দিয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত কোম্পানির সম্পদ ও দায়ের বিবরণ, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দেনার বিবরণ জানতে চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
তবে সময় চেয়ে আবেদন করে ইভ্যালি। সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ২৬ আগস্ট দেওয়া হিসাবে ইভ্যালি জানিয়েছিল, গ্রাহকরা তাদের কাছে ৩১১ কোটি টাকা পাবেন।
গ্রাহকের পাওনার সমপরিমাণ টাকা পণ্য কেনার জন্য অগ্রিম মূল্য বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে। এর আগে ১৯ আগস্ট ইভ্যালি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তাদের এ দায় ও সম্পদের তথ্য দেয়।
ওই সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। হাফিজুর রহমান আরও বলেন, ইভ্যালি তাদের সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছে ১০৫ কোটি টাকা। কোম্পানির ব্র্যান্ড ভ্যালু দেখিয়েছে ৪২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সেভাবেই তারা তাদের ব্যালেন্স শিট মিলিয়েছে। জানা গেছে, ইভ্যালির ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ টাকার দেনার বিপরীতে ব্র্যান্ড ভ্যালু দেখানো হয়েছে ৪২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
অদৃশ্য সম্পদ দেখানো হয় ১৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং দৃশ্যমান সম্পদের হিসাব দেখানো হয়েছে ১০৫ কোটি ৫৪ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা।