স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী হাট ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষকে মারার বিষয় নিয়ে এমপি ফারুক চৌধুরীর মিথ্যাচারের প্রমাণসহ সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ রাজশাহী জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাঃ আসাদুজ্জামান আসাদ।
শনিবার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহীর লক্ষীপুর মোড়ে অবস্থিত আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়।
গত ১৩ জুলাই জাতীয় একটি গণমাধ্যমে ‘সবার সামনে ১৫ মিনিট ধরে অধ্যক্ষকে পেটালেন এমপি’ এমন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা রাজাবাড়ী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে এমপি ফারুক চৌধুরীর বেপরোয়া লাথি, কিল-ঘুশি ও হকি স্টিকের আঘাতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালশিরা জমেছে এমন অভিযোগের কথা উঠে আসে। এর পর থেকেই এই ঘটনা সারাদেশে আলোচিত হয়।
এছাড়াও সেদিনের সংবাদে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হয়। তিনি ওই অধ্যক্ষর শরীরে বিভিন্ন অংশে কালশিরা থাকা, সেই সাথে এমপি ফারুক চৌধুরী এর আগেও এমন ধরেনের কাজ করেছে যা দলের ভাবমূর্তির নষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।
এসব সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে গত ১৪ জুলাই এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহী নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় নিজস্ব রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে রাজাবাড়ী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা উপস্থিত ছিলেন।
এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সেদিন আমি অধ্যক্ষ সেলিমকে মারধর করিনি। শিক্ষকদের নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধক্কি শুরু হলে আমি নিজে গিয়ে তাদের নিবৃত করি। এছাড়াও অধ্যক্ষ সেলিম রেজা নিজেও সাংবাদিকদের বলেন সেদিন এমপি আমাকে মারধর করিনি বলে অস্বীকার করেন এবং সংবাদটি সম্পন্ন মিথ্যা বলে দাবি করেন।
এসময় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী আওয়ামী লীগ নেতা আসাদকে দায়ী করে এসব সংবাদ উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে করানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেন।
এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী অধ্যক্ষকে মারধর ও অধ্যক্ষ নিজে মার খাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করার কারণে পুনরায় আওয়ামী লীগ নেতা আসাদ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত প্রমাণসহ তুলে ধরে এই সাংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা নিজে মারধরের শিকার হয়েছেন এবং সেদিনের ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে জেলা আওয়ামী লীগের কোন এক নেতার সাথে কথোপোকথন করছেন সেটির অডিও রেকর্ড সাংবাদিকদের শোনান।
এছাড়াও এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিভিন্ন অপকর্মগুলো তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, অর্থ আত্মসাৎ, খাসজমি ইজারায় দুর্নীতি, স্কুল, কলেজ মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি এবং জামায়াত-বিএনপির ব্যক্তিদের নিয়োগসহ ২০ ধরনের দুর্নীতির তদন্ত শুরু করে দুদক।
এদিকে ২০১১ সালে তানোর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আব্দুল করিম সরকারি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত, বিএনপি নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগে যোগদান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৭০ ভাগ জামায়াত বিএনপির ক্যাডারদের চাকরী প্রদান, মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষক, নিয়োগ বাণিজ্য, দলীয় নেতাকর্মীদের জুতাপেটা, স্কুলের ক্লাস বন্ধ রেখে সংবর্ধনা নেওয়া, মাদকব্যবসায়ীকে বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে বসা, নৌকায় ভোট না দেওয়াসহ বিভিন্ন কাজে জড়িত থাকার অপকর্ম তুলে ধরেন।
স্ব.বা/ম