সেই ইচ্ছা পূরণ না হতেই চির বিদায় নিলেন ওস্তাদ নিমাই!

সারাদেশ
নাটোর প্রতিনিধিঃ ওস্তাদ নিমাই তালুকদারের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কিংবা সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো সম্মাননা। তবে তা নিয়ে তার কোনো আফসোস ছিলনা। তাই তিনি তার গানের শুরে বলেছিলেন-
‘যদি ভুলে যাও মোরে জানাবো না অভিমান,
আমি এসেছিনু তোমার সভায় দু’দিন শোনাতে গান’।
‘আমি এসেছিনু অবসর ক্ষণে, মুকুল ফোটাতে তব মনবনে,
তার বিনিময়ে আমি কোনও দিন চাইনি তো প্রতিদান’।
‘প্রভাতে কে আর মনে রাখে বলো রজনী শেষের চাঁদে,
শুধু দু’দিনের সাথী রেখে আর মালার বাঁধনে বাঁধে’।
‘গান সারা হলে আমি যাই সরে, কোন ক্ষতি নাই ভুলে যেও মরে
তোমার আকাশে ফুটুক জোছনা মোর দিন অবসান’।
প্রতিদান না পেয়ে চোখের জ্বলে নিজেকে ভাসিয়ে সেই ইচ্ছা পূরণ না হতেই চির বিদায় নিয়ে নিড়বে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। নাটোরে একটি শাস্ত্রীয় সংগীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। যাতে করে নতুন প্রজন্ম শাস্ত্রীয় সংগীত শিখতে পারে, এই সংগীতের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে। ইচ্ছা, স্বপ্ন সবকিছুই অপূরণীয় থেকে গেলো নাটোরের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী ওস্তাদ নিমাই তালুকদারের।
দীর্ঘদিন যাবৎ দুরারোগ্য রোগে ভুগে বার্ধক্য আর রোগের কাছে হার মেনে গত ২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার পরলোক গমন করেন এই গুণী শিল্পী।
ওস্তাদ নিমাই তালুকদার রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে ১৯৫১ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
স্বাধীনতার পর বাবার সাথে নাটোরে বসবাস শুরু করেছিলেন নিমাই তালুকদার। এই ওস্তাদ শিল্পী নাটোর পৌরসভার দক্ষিণ চৌকিরপাড়া মহল্লায় বসবাস করতেন। দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা ছিলেন তিনি।
ওস্তাদ নিমাই শাস্ত্রীয় সংগীতের হাতে খড়ি নিয়েছিলেন বাবা ইশ্বরচন্দ্র তালুকদারের কাছে।পরবর্তীতে নাটোরে ওস্তাদ সোনামিয়া এবং ওস্তাদ সন্তোষ কুমার চৌধুরীর কাছে সঙ্গীতের তালিম নিয়েছিলেন। তিনি নিজের চেষ্টায় শাস্ত্রীয় সংগীতে নিজের প্রতিভা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নাটোরে।কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় এইভাবে নাটোরের আর কত গুণী শিল্পী ইচ্ছা, স্বপ্ন পূরণ করতে না পেরে নিজের চোখের জ্বলে নিজেকে ভাসিয়ে নিরবে হারাবেন?
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *