মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ৪

সারাদেশ

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুজ্জামান স্বাধীনকে প্রধান করে ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) রাতে রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় মামলাটি দায়ের করেন আহত ছাত্র আশিকুর রহমান। এ মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

চন্দ্রিমা থানার ওসি সিরাজুম মুনীর বলেন, ‘নয়জনের নাম উল্লেখ করে ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১২ জনকে। মামলার পর রাতে দুইজন ও সকালে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনের ছোট ভাই মিঠু ও স্ত্রী বিউটি রয়েছেন। হামলার ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রেফতার অপর দুইজনের নাম পরে জানানো হবে।’

তিনি বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাকি আসামি গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।

গত শুক্রবার বিকেলে রাজশাহীর বেসরকারি শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুরিরুজ্জামান স্বাধীনের ভাই মিঠু ও টিটুসহ একদল ক্যাডার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হলে তাদের  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে শনিবার কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিত আদেশের বলে দ্রুত সময়ে অন্য প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে তাদের মাইগ্রেশান সম্পন্ন করার দাবি জানায়।

অপরদিকে, দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল কলেজটি পরিদর্শন করেছেন। শর্ত পূরণ না হওয়ায় গত ২ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রাণলয় কলেজটি বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের নির্দেশ দেয়। তবে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার প্রেক্ষিতে শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল কলেজটি পরিদর্শনে আসেন।

তারা হলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর একেএম আমিরুল ইসলাম মোরশেদ, বিএমএন্ডডিসির প্রতিনিধি প্রফেসর ডা. সরফুদ্দিন আহমেদ, স্বাপকম এর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কলান বিভাগের উপ-সচিব আবদুল কবীর ও স্বাস্থ্য শিক্ষা দপ্তরের সহকারি পরিচালক ডা. উৎপল কিশোর। তারা ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন।

পরে প্রফেসর ডা. সরফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাস ঘুরে দেখলাম। আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। কি কি জিনিস নাই আর কি কি জিনিস আছে তা দেখেছি। মেডিকেল কলেজের যে পরিবেশ থাকা প্রয়োজন তা না থাকলে সেটি চলবে না। তবে যদি পরিবেশ তৈরি করতে পারে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারে তবে ঢাকায় গিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিব।’

হামলার ঘটনায় ঘৃণা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘যারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার হবে। ’

প্রফেসর ডা. সরফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘কোন দিন যদি এ মেডিকেল কলেজ চালু হয় তবে শিক্ষক নিয়ে আসতে হবে। যতদিন শিক্ষক নাই ততদিন শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি পারি তাদের অন্য কলেজে পাঠানো হবে।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *