জেলগেটে ছেলের সামনে মা-বাবার বিয়ে

সারাদেশ

স্বদেশ বাণী ডেস্ক : ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির সঙ্গে ধর্ষণের শিকার সেই নারীর বিয়ে হয়েছে। শনিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের গেটে এই বিয়েতে উপস্থিত ছিল তাদের ৯ বছর বয়সী ছেলে। বিয়ের শর্ত পূরণের মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির জামিন পাওয়ার কথা রয়েছে।

কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা সাংবাদিকদের জানান, ‘আদালতের নির্দেশে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়। সকাল ১২টার দিকে কনে ও বরপক্ষের ১৪ জন জেলগেটে এলে তাদেরকে জেল সুপারের কক্ষে বসানো হয়। পরে সাদা পাঞ্জাবি পরে জানালার পাশে এসে বর দাঁড়ান। জানালার অপর পাশে তার ছেলেকে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়। বন্দী বাবা হাসিমুখেই বিয়ের রেজিস্ট্রারে সই করেন। এ সময় পুরোহিত বিয়ের মন্ত্র পাঠ করেন। পরে মালাবদল সিদুর লাগিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।’

সিনিয়র জেল সুপার বলেন, ‘ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। অতিথি ও কর্মচারীদের মিষ্টিমুখেরও ব্যবস্থা করা হয়। বিয়ের প্রতিবেদন দ্রুতই আদালতে পাঠানো হবে বলে।’

মামলা ও কারা সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার নারী ওই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির আত্মীয়। দুজনেরই বাড়ি গোদাগাড়ীতে। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০১১ সালে মেয়েটি গর্ভবতী হলে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান প্রেমিক। মেয়েটির বয়স তখন ছিল ১৪ বছর। ওই বছরের ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ী থানায় মেয়েটি ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন।

২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ ব্যাপারে অভিযোগ গঠন হয়। বিচার শেষে ওই বছরের ১২ জুন ধর্ষণের দায়ে প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। এরপর থেকে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কারাগারেই ছিলেন।

চলতি বছরে হাইকোর্টে আসামির পক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করেন। গত ২২ অক্টোবর সেই আবেদনের ওপর শুনানির সময় তার আইনজীবী জানান, ‘আসামি ও ভুক্তভোগী নারী বিয়েতে সম্মত। শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ কারাফটকে তাদের বিয়ে দেয়ার আদেশ দেন। এ বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *