রাতের আঁধারে ব্রিজ কেটে ফেললেন আ’লীগ নেতা

সারাদেশ

স্বদেশ বাণী ডেস্ক : বরিশালের বানারীপাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহিম খানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইলেকট্রিক ড্রিল গ্রাউন্ডার মেশিন দিয়ে ব্রিজের মধ্যবর্তী স্থান কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের ইন্দেরহাওলা গ্রামের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ফারুক হোসেন ও একই ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম খানসহ অজ্ঞাত ১০ জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে ঘটনার রাতে খবর পেয়ে লবণসাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মো. আবু হানিফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এলাকার উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার পাশাপাশি তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এ ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মো. আবু হানিফ যুগান্তরকে বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে পরিদর্শনকালে ইউপি সদস্য রাজু আহম্মেদসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি জানান- ঝুঁকিপূর্ণ ওই ব্রিজটি ভেঙে ফেলার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মৃধা ইন্দেরহাওলা গ্রামের রহিম খান নামের এক ব্যক্তিকে সাব-কন্ট্রাক্ট দিয়েছেন বলে তাকে জানান। তিনি ওই বিষয়টি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন।

অপরদিকে উপজেলা পরিষদ থেকে ওই ব্রিজটিসহ বিভিন্ন সময় টেন্ডার দেয়া এই উপজেলার একাধিক পুরাতন ব্রিজের লোহার বিম ও রড সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে জমা রাখার জন্য রেজুলেশন করে দেয়া হয়েছে। ফলে রাতের আঁধারে ইন্দেরহাওলা গ্রামের ওই বিষয়টি ভেঙে ফেলা হলেও তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি।

এ ব্যাপারে সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মৃধা যুগান্তরকে জানান, ইন্দেরহাওলা সাইক্লোন শেল্টারসংলগ্ন নাছির শিকদারের রাইস মিলের উত্তর পাশের ব্রিজটি (৬০ ফুট) ৭৮ লাখ ৭৮ হাজার ৩৭৫ টাকা ব্যয়ে নির্মাণের জন্য সম্প্রতি বরিশাল এলজিইডি থেকে টেন্ডার দেয়া হয়। এ সময় ওই টেন্ডারটি বরিশালের মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ পায়।

তিনি জানান, সম্প্রতি ঠিকাদারি ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন করার জন্য সাব-কন্ট্রাক্ট হিসেবে নিয়েছেন তিনি। দুই-এক দিনের মধ্যেই সেই ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু করবেন বলে জানান। এছাড়া তিনি ওই ব্রিজটি ভেঙে ফেলার পাশাপাশি ব্রিজের লোহার বিম ও রড তার ইউনিয়ন পরিষদে জমা রাখার জন্য ইন্দেরহাওলা ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম খান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে সাব-কন্ট্রাক্ট দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে অভিযোগকারী ইন্দেরহাওলা গ্রামের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ফারুক হোসেন যুগান্তরকে জানান, শুক্রবার গভীর রাতে ইন্দেরহাওলা সাইক্লোন শেল্টারসংলগ্ন মো. নাছির শিকদারের রাইস মিলের উত্তর পাশে ৮ গ্রামের জনতার চলাচলের একমাত্র ব্রিজটি (৬০ ফুট) শুক্রবার গভীর রাতে তারা আবদুর রহিম খানের নেতৃত্বে অজ্ঞাত ১০ জন পল্লী বিদ্যুতের লাইনে অবৈধ সংযোগ দিয়ে ইলেকট্রিক ড্রিল গ্রাউন্ডার মেশিন দিয়ে ওই ব্রিজের মধ্যবর্তী স্থান কেটে ফেলে। এ সময় মেশিনের শব্দ পেয়ে স্থানীয় জনতা তাদের হাতে-নাতে ধরে ফেলে। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা এ বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে খবর পেয়ে লবণসাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মো. আবু হানিফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির যুগান্তরকে জানান, আমরা প্রত্যেক ইউনিয়নের টেন্ডার হওয়া পুরাতন ব্রিজের লোহার বিম ও রড স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে জমা রাখার জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে রেজুলেশন করে দিয়েছি। যে ইউনিয়নে ব্রিজের বিম ও রড সঠিকভাবে পাওয়া যাবে না তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *