পল্লীবন্ধুর অবদান প্রজন্মের দুয়ারে পৌঁছে দিন : অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি

সারাদেশ

স্বদেশবাণী ডেস্ক: দেশের জন্য সাবেক রাষ্ট্রপতি ও পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাজগুলো বর্তমান প্রজন্মের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের যুগান্তর ভবনে জাতীয় মহিলা পার্টি ঢাকা জেলার নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় উপস্থিত সব নেতাকর্মীর সম্মতিতে রেশমী হোসেন আজাদকে ঢাকা জেলা মহিলা পার্টির আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়।

জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেন, ৯ বছরের শাসনকালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের জন্য যে অবদান রেখেছেন, তা বলে শেষ করা যাবে না। ’৮৮-এর বন্যায় তিনি সাঁতরিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছিলেন, ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিলেন। নারী নির্যাতন রোধে পারিবারিক আইন প্রণয়ন করেছেন। বিশেষ করে ঢাকা জেলায় পল্লীবন্ধুর অবদান অবিস্মরণীয়। পান্থপথ, বিজয় সরণি, প্রগতি সরণি, সায়েদাবাদ ও মহাখালীর বাসস্ট্যান্ড সবই তার আমলে করা। তিনি রাস্তাঘাট করেছেন, স্মৃতিসৌধ করেছেন, মসজিদ-মাদ্রাসা করেছেন। ঢাকার এ বেড়িবাঁধ যদি তিনি না করতেন, এ শহর পানিতে তলিয়ে যেত। আমরা ঢাকা থেকে কোথাও যেতে পারতাম না। উনি মানুষপ্রেমিক, দেশপ্রেমিক, মানুষকে ভালোবাসতেন, মানুষের কথা ভাবতেন। তার জন্য ওনার নাম দেওয়া হয়েছিল পল্লীবন্ধু। জাতীয় মহিলা পার্টির নেতাকর্মীদের এসব বিষয় জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।

সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মানুষকে যারা ভালোবাসে, সহযোগিতা করে-মহান আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। সেই শিক্ষা নিয়েই জাতীয় পার্টি কাজ করে যাচ্ছে।

জনগণকে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে পার্টির কো-চেয়ারম্যান বলেন, এ দলে মাদককাণ্ডের ছড়াছড়ি নেই, সন্ত্রাসী, মারামারি, খুনোখুনি, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজিরও স্থান নেই। জাতীয় পার্টি আদর্শ পার্টি। নিখুঁত এ পার্টিতে যোগ দিয়ে আপনারা নিজেদের ধন্য মনে করতে পারেন।

জাতীয় মহিলা পার্টির ঢাকা জেলার নেতাদের উদ্দেশে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেন, করোনাকালেও আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদের এ উপস্থিতি দেখে আমি অভিভূত। আগামী দেড় মাসের মধ্যে আপনারা যার যার থানা থেকে সুন্দর কমিটি গঠন করবেন। কমিটির কর্মীরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভালো সব কাজের কথা মানুষকে জানাবেন। দল গোছাবেন। জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করবেন। জাতীয় মহিলা পার্টি শক্তিশালী হলে চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের হাত শক্ত হবে। তার হাত শক্ত হলে জাতীয় পার্টি শক্তিশালী হবে। আমি মনে করি, জাতীয় মহিলা পার্টিই পারবে জাতীয় পার্টির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ফিরিয়ে আনতে।

ঢাকা জেলার নেতাদের উদ্দেশে জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম আরও বলেন, প্রত্যেকের কাছে আমরা যাব। প্রত্যেককে পল্লীবন্ধুর কথা বলব। এবং আমরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত থাকব। বন্ধুর মতো থাকব, বোনের মতো আমরা সংঘবদ্ধ হব। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব। আপনাদের দেড় মাসের সময় দিলাম। সুসংহতভাবে আপনাদের এলাকাগুলো সুন্দর করে সাজিয়ে জানাবেন। আমরা লোক পাঠাব, আমি নিজেই কথা বলব। যথাসময়ের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ের সব কমিটি উপহার দিলে পুরস্কৃত করা হবে। আসুন বোনেরা, সব ভুলে গিয়ে একসঙ্গে, কাঁধে কাঁধ রেখে আমরা এগিয়ে যাব। মহিলা পার্টিকে রূপে-গুণে ভরে দেব। আমাদের খালি মাঠ পূর্ণ হয়ে যাবে।

পার্টির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব হেনা খান পন্নি বলেন, দেশের প্রায় ৫০ শতাংশই এখন নারী। অথচ রাজনীতিতে নারীরা সেভাবে এগিয়ে আসছেন না। জাতীয় মহিলা পার্টি গঠনের পর রাজনীতিতে নারীদের অগ্রগামী করতে বদ্ধপরিকর আমরা। জাতীয় পার্টির কাছে দেশের নারীরা ঋণী। কারণ, স্ত্রীর অসম্মতিতে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে তার ১৪ বছরের সাজার আইন এরশাদই করেছেন। নারী নির্যাতন ঠেকাতে এরশাদের অবদান অনস্বীকার্য। তাই জাতীয় মহিলা পার্টির কর্মীদের প্রতি বিনীত অনুরোধ থাকবে, এলাকায় ঘরে ঘরে গিয়ে নারীদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দিতে আহ্বান করুন। দলকে শক্তিশালী করুন।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শারমীন পারভীন লিজা, হাসনা হেনা, মোমেনা বেগম, জেসমীন নূর প্রিয়াংকা, আসমা আক্তার রুমি, মিনি খান, নাজনীনা আহমেদ নিনা, সীমানা আমীর, কুমিল্লা উত্তরের সভাপতি ফেরদৌসি বকুল প্রমুখ। এ সময় ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ, দোহার, কেরানীগঞ্জ, সাভার, ধামরাই ও আশুলিয়া থানার বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

পরে সভায় উপস্থিত সব নেতাকর্মীর সম্মতিতে রেশমী হোসেন আজাদকে ঢাকা জেলা মহিলা পার্টির আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়। এ সময় রেশমী জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি ও সদস্যসচিব হেনা খান পন্নিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য যা যা করা দরকার, তা করা হবে বলে জানান জেলার নতুন কমিটির আহ্বায়ক রেশমী। তিনি আরও বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টিতে যে নক্ষত্র উপহার দিয়েছেন, তিনি হলেন অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি। মাঠে-ঘাটে তার কাজ, জনসেবা, উদ্যোগ দেখে নারীরা রাজনীতিতে আগ্রহী হচ্ছেন। আমিও তাকে দেখেই জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেছি। সালমা ইসলাম রাজপ্রাসাদে থাকতে পারতেন; কিন্তু তিনি মানুষকে ভালোবাসেন বলেই রাজপথে নেমেছেন। কমিটির সদস্যরা তার মতোই নেত্রী হতে চান।

মতবিনিময় শেষে জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি ও সদস্যসচিব হেনা খান পন্নির হাতে ফুল দিয়ে পার্টিতে যোগ দেন ব্যবসায়ী নারগিস পারভিন। তারা তাকে স্বাগত জানান।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *