স্বদেশবাণী ডেস্ক: রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের পাশাপাশি দ্বীপটিতে রোহিঙ্গাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্ন এনজিও তাদের এতে যুক্ত করছে। ফলে রোহিঙ্গারা সুরক্ষিত ঘরে আশ্রয় এবং ত্রাণসামগ্রী লাভের পাশাপাশি জীবিকার সন্ধান পাবে।
অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। ভাসানচরে আশ্রিত রোহিঙ্গারা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হলে তাদের মধ্যে কমে আসবে অপরাধপ্রবণতা। সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) এবং ৪৩টি স্থানীয় এনজিও তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে সহযোগিতা করছে।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে নিরাপত্তা অভিযানের নামে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালায়। ওই সময়ে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। ঘনবসতির কারণে সরকার সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়।
বাংলাদেশ সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে আশ্রয় দেওয়ার লক্ষ্যে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়। এখন পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিরাও পর্যায়ক্রমে আসবেন।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে মোটিভেশনাল কার্যক্রম এবং প্রশিক্ষণ শুরু করেছে বিআরডিবি। ভাসানচরে রোহিঙ্গা শিবিরে দাঁড়িয়ে বিআরডিবির যুগ্ম পরিচালক সুকুমার চন্দ্র দাস বলেন, এ পর্যন্ত ৭৫০ জন রোহিঙ্গাকে কর্মমুখী বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
এর মধ্যে রয়েছে হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ, সেলাই মেশিনের প্রশিক্ষণ, কৃষি, শাকসবজি উৎপাদন, কুটির শিল্প, গবাদি পশুপালন প্রভৃতি। তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ শেষে তাদের উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে প্রকল্প গ্রহণের বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন।
তাদের বিভিন্ন উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। ফ্যাশন হাউজ কে ক্র্যাফট ভাসানচরে নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। কে ক্রাফটের পরিচালক খালিদ মাহমুদ খান বলেছেন, তারা ১৫০ জন রোহিঙ্গাকে তিন মাসের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
তাদের কাটিং, প্যাটার্ন, সেলাই, প্রিন্টিং, স্ক্রিন প্রিন্টিং, ডিজাইন, রং মেশানো, ব্লক প্রিন্টিং, মেশিন অ্যামব্রয়ডারি প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। করোনার মধ্যেও এনজিওগুলো ইংরেজি ও রোহিঙ্গা ভাষায় শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমও পরিচালনা করছে। রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকেই শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে।
ভাসানচর প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের কাজের মধ্যে রাখতে হবে। তারা ভাসানচরে বিভিন্ন উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হলে সরকার ও রোহিঙ্গারা লাভবান হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের কাজ করার আগ্রহ প্রবল। তারা ভাসানচরে গবাদি পশুপালন করতে পারবে।