যমুনা নদীর মাঝে মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি

সারাদেশ

স্বদেশবাণী ডেস্ক: সিরাজগঞ্জের চৌহালীর যমুনা নদীর মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা মিটুয়ানী সেতুটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বর্ষার পূর্বেই অকেজো সেতুটি অপসারণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

প্রায় ৭ বছর আগে যমুনা নদীতে বিলীন হয় সেতুর সংযোগ সড়ক। এজন্য বর্ষায় নৌ চলাচলে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়ে ঘটে দুর্ঘটনা।

জানা যায়, যমুনা বিধ্বস্ত চৌহালী উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের জন্য প্রায় দেড় যুগ আগে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের মিটুয়ানী বাজার সংলগ্ন ৭৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হয়।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মিত সেতুটি ২০১৪ সালের বন্যায় ভাঙনের মুখে পড়ে। তবে সেতুটি বিলীন না হলেও সংযোগ সড়ক ও মিটুয়ানী বাজারসহ বিশাল এলাকা নদীগর্ভে চলে যায়। বর্তমানে নদীর পূর্বপাড় হতে সেতুটি আধা কিলোমিটার ভিতরে দাঁড়িয়ে আছে।

একইসঙ্গে সাড়ে ৪ কিলোমিটার পাকা সড়ক নদীতে চলে যাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের উপজেলা সদরে যাতায়াতে শুষ্ক মৌসুমে হাঁটা আর বর্ষায় নৌপথই একমাত্র ভরসা।

এলাকাবাসী জানান, বর্ষার সময় মিটুয়ানী থেকে সম্ভুদিয়া পর্যন্ত নৌ সার্ভিস চালু থাকে। এতে অন্তত ১২টি নৌকায় সাড়ে ৯ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। এছাড়া উত্তরাঞ্চলের সিলেট, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, ভুয়াপুরে পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌকা চলাচল করে এ পথে।

ওই সময় ব্যস্ততম নৌপথের মাঝে বিশাল আকৃতির অকেজো এ ব্রিজটি দাঁড়িয়ে থাকায় প্রতিনিয়তই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় নৌকার চালক ও যাত্রীদের।

এলাকার নৌকার মাঝি মোকাদ্দেস আলী ও যাত্রী বুলুন সরকার জানান, নদীর মাঝে সেতু থাকায় স্রোতের টানে অপরিচিত নৌকার মাঝি ও কুয়াশার মধ্যে যাত্রীবাহী নৌকা চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। এজন্য বর্ষা মৌসুম আসার আগেই সেতুটি অপসারণ না করা হলে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হবে।

৫ বছর আগে এই সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে এক নৌকার ৯ জন নিহতসহ বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হন। এছাড়া ২ বছর আগে খাষপুখুরিয়া এলাকার এক স্কুলছাত্র নদীতে গোসলে গিয়ে স্রোতের টানে ভেসে গিয়ে সেতুর ধাক্কায় নিহত হয়। সেতুটি দ্রুত অপসারণ করে নিরাপদ নৌ যোগাযোগ চালুর দাবি জানাই।

এ বিষয়ে বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী বলেন, অব্যবহৃত গার্ডার সেতুটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সেতুটি অপসারণে সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে আবেদন করা হয়েছে। দীর্ঘ দিন পেরিয়ে গেলেও সেতুটি অপসারণে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় নৌকার যাত্রী ও চালকরা। এজন্য বর্ষার আগেই সেতুটি অপসারণে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করছি।

এ ব্যাপারে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা ইয়াসমিন যুগান্তরকে জানান, মিটুয়ানী গার্ডার সেতুটি অপসারণে ইতোমধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে লিখিতভাবে অবগত করা হয়েছে। ওই বিভাগের মাধ্যমে নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সেতুটি অপসারণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *