আবারো আত্মসমালোচনা করলেন হেফাজতের সেই নায়েবে আমীর

সারাদেশ

স্বদেশবাণী ডেস্ক: আবারো হেফাজতে ইসলামের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ‘আত্মসমালোচনা’ করেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও নারায়ণগঞ্জ ডিআইটি মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আউয়াল।

শুক্রবার জুমার বয়ানে তিনি হেফাজতের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আবারও নিজস্ব মতামতের কথা তুলে ধরেন।

মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যারা মাঠে কাজ করে আর যারা আমাদের মধ্যে অতিউৎসাহী রয়েছেন- তাদের কারণেই দেশে আগুন, গাড়ি ভাংচুর হয়েছে। কিন্তু আফসোস হলো, সেই ষড়যন্ত্রের গভীরতা বুঝতে আমরা ভুল করছি। না বোঝার ফলে সেই ভুলের মাশুল এখন আমাদের দিতে হচ্ছে। যারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে সবাই কওমি লোক না। আমাদের কালারিং করার জন্য আমাদের ঘাড়ে সব চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

মাওলানা আব্দুল আউয়াল হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। এর আগে হেফাজতের ডাকা হরতালে নারায়ণগঞ্জে সহিংস ঘটনার সমালোচনা করে সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।

পরবর্তীতে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুলহকসহ একটি প্রতিনিধি দল নারায়ণগঞ্জে এসে তার মান ভাঙান।

এদিকে শুক্রবার মসজিদে বয়ানকালে আব্দুল আউয়াল বলেন, আল্লাহ বলেছেন- ইসলামে অনেক দল হবে কিন্তু কেয়ামত পর্যন্ত একটি দল হকের উপরে থাকবে। সেই দলটাই আমি মনে করি কওমি অঙ্গন। যেহেতু আমরা সহি এবং হকের ওপরে আছি। তাই বাকি ৮-১০টা দল বুঝে-শুনে, চিন্তা করে এই হকের ওপর থাকা কওমি অঙ্গনকে ঘায়েল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। আমাদের কলুষিত বানিয়ে সমাজের কাছে, মানুষের কাছে অনাস্থার দলে পরিণত করা তাদের টার্গেট।

তিনি বলেন, আজকে বিভিন্ন অবস্থা আমরা দেখছি, ওমুক স্থানে গাড়ি ভাংচুর, উমুক স্থানে আগুন। এগুলো কারা করছে? এ ঘটনার মধ্যে দুটি দল আছে। একটি হলো আমাদের বিরুদ্ধে যারা মাঠে কাজ করে; অন্যটি আমাদের মধ্যে অতিউৎসাহী কিছু মানুষ। যারা আন্দোলন বুঝে না। কিন্তু আফসোস হলো, সেই ষড়যন্ত্রের গভীরতা বুঝতে আমরা ভুল করছি। না বোঝার ফলে সেই ভুলের মাশুল এখন আমাদের দিতে হচ্ছে।

মাওলানা আব্দুল আউয়াল আরও বলেন, আমাদের কোনো দাবি যদি সরকার থেকে আদায় করতে হয়, তাহলে সেই দাবি আদায় করার বিভিন্ন পথ আমাদের সামনে ছিল। সেভাবে আমরা সরকারকে বাধ্য করতে পারতাম। আর না মানলে সরকারকে বলা যেত আমাদের বোঝান, এই কারণে দাবি আমরা মানতে পারি নাই। গত রমজান মাসে যখন করোনার কারণে সব কিছু বন্ধ ছিল। তখনও কিন্তু সরকার আমাদের দাবির ফলে হেফজখানাগুলো চালু করে দিয়েছিলেন, ঈদের পরেও আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার ফলে কওমি মাদ্রাসাগুলোও চালু করে দিয়েছিলেন। কওমি অঙ্গন থেকে সম্প্রতি এসব ভাংচুর করার ফলে দেশের মানুষের সম্পদ নষ্ট হয়েছে। আমাদের প্রতি ক্ষোভ থেকে এখন আবার কওমি মাদ্রাসাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

নিজের বয়ানে পবিত্র কোরআন শরিফের ৩টি আয়াত উপস্থাপন করে মাওলানা আব্দুল আওয়াল সরকারের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, রাগ কমিয়ে মাদ্রাসাগুলো খুলে দেন। আর যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনুন। সবাইকে একপাল্লায় নিয়ে এসে শাস্তি দিলে এটা অবশ্যই জুলুম হবে।

এ সময় মাওলানা আব্দুল আওয়াল বলেন, অনেকে আমার সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন। কিন্তু আমি আপনাদের কথায় চলব না। আমাকে আল্লাহ বিবেক দিয়েছেন, বুদ্ধি দিয়েছেন। কোরআন হাদিস গবেষণা করার যতটুকু যোগ্যতা দিয়েছেন, আমি সেটুকু গবেষণা করেই সামনে এগোব।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *