তানোরে বিয়ের দাবিতে অনশন দড়ি দিয়ে খুটিতে বেঁধে নির্যাতন ভাইরাল! 

রাজশাহী লীড
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে পরকিয়া প্রেমের ফাঁদে ফেলে গৃহবধূর সর্বস্ব লুট করে অন্যত্র বিয়ে করার খবরে ওই বধু বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে বসলে তাকে দড়ি দিয়ে খুটির সাথে বেধে রাখে প্রেমিক বখাটে শাহিন ও তার চাচাতো ভাই সোহেল বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার সকালের দিকে উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়ন ইউপির গাল্লা বৈদ্যপুর গ্রামে ঘটে এমন অমানবিক ঘটনা। দড়ি দিয়ে খুটির সাথে গৃহবধূর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সাথে সাথে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয় ঘটনাটি। অবশ্য ওই গৃহবধূ অনশনে বসার আগে মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু রহস্য জনক কারনে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায়  গৃহবধূর উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এঘটনার সাথে জড়িত দের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন গ্রাম বাসী। এর আগে গত  বুধবার দুপুরের দিকে মুন্ডুমালা বাজারে প্রেমিক বখাটে শাহিনকে ওই গৃহবধূসহ লোকজন আটকায়। কিন্তু শাহিনের চাচাতো ভাই সোহেল ও মেম্বার সোহরাবের হস্তক্ষেপে বিয়ের কথা বলে ছেড়ে নেই।
ওই গৃহবধূ অভিযোগে উল্লেখ করেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়ন ইউপির গাল্লা বৈদ্যপুর গ্রামের শাহিন দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরই এক পর্যায়ে শাহিন বিদেশ যান। এর ফাকে ওই মেয়ের অন্যত্র বিয়ে হয়। শাহিন বিদেশ থেকে এসে পুনরায় ওই মেয়ের সাথে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রেমের সম্পর্কের কারনে ওই গৃহবধূর সাথে একাধিক বার শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সম্পর্কে ওই গৃহবধূ গর্ভবতী হয়ে পড়ে। কিন্তু  শাহিন ও তার চাচাতো ভাই সোহেলর কুপরামর্শে গর্ভপাত ঘটায়। বারবার ওই গৃহবধূ শাহিনকে বিয়ের কথা বললে নানা ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। গত বুধবার শাহিনকে মুন্ডুমালা বাজারে দেখে বিয়ের দাবিতে ওই গৃহবধূ সহ স্বজনরা চাপ দেয়া শুরু করেন। কিন্তু শাহিনের চাচাতো ভাই সোহেল মেম্বার সোহরাবের মধ্যস্থতায় বিয়ের কথা বলে শাহিনকে ছেড়ে নেই। তারপর থেকেই শাহিন ও সোহেল ওই গৃহবধূকে নানা হুমকি দেয়া শুরু করেন। বাধ্য হয়ে ওই গৃহবধূ মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দেন। তার পরের দিন বৃহস্পতিবার ওই গৃহবধূ শাহিনকে বিয়ে করার জন্য   তার বাড়িতে অনশন করার জন্য যায়। কিন্তু শাহিন ও তার চাচাতো ভাই সোহেল  ওই গৃহবধূ কে মারপিট করে দড়ি দিয়ে খুটির সাথে গরুর মত করে বেধে রাখে।
আরো উল্লেখ, প্রেমের সম্পর্কের কারনে নানা প্রলোভন দেখিয়ে পর্যায়ক্রমে তিন লাখ টাকা ও ২৫ হাজার টাকা মূল্যের স্মার্ট ফোন কিনে নেয় শাহিন। গত বুধবারে ওই গৃহবধূ বলেছিলেন, শাহিন দুএকদিনের মধ্যে অন্যত্র বিয়ে করবে। সে বিয়ে করলে আমি কোথাও যাব। আমার আত্মহত্যা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। আমি শাহিন কে বিয়ে করতে চাই।
বুধবার সন্ধ্যার পরে বৈদ্যপুর গ্রামে মেম্বার সোহরাবের কাছে যাওয়া হলে তিনি জানান, সন্ধ্যার সময় সালিশ বিচার হওয়ার কথা। কিন্তু মেয়ের কোন লোকজন আসেনি। আমি এসব সালিশ বিচার করতে ইচ্ছুক না। আইনে যা আছে সেটা হবে। শাহিনের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার চাচাতো ভাই সোহেল জানান, ওই মেয়ের চরিত্র ভালো না। শাহিনের সাথে তিনমাসের সম্পর্ক যা হয় দেখা যাবে বলে দাম্ভিকতা দেখান তিনি।
গ্রামের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করে বলেন,  আলফাজ নামের শাহিনের এক আত্মীয় সেনাবাহিনীতে চাকুরী করে। সে ছুটিতে এসে ওই গৃহবধূ কে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখান। একারনে ওই গৃহবধূ কারো সাথে কোন কথা বলছেন না। তবে আলফাজের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে  জানান, আমি দুই দিনের ছুটিতে এসেছে পরিবারকেই সময় দিতে পারছিনা। এসব ঘটনার সাথে কোনভাবেই জড়িত না।
অভিযোগের বিষয়ে থানার ওসি আব্দুর রহিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি ছিলাম না শুক্রবার দিবাগত  রাতে এসেছি, এমন কোন অভিযোগ থানায় হয়নি। মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়িতে হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়ির ০১৩২০১২২৬২২ মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *