বানেশ্বর হাটের জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ

রাজশাহী

পুঠিয়া প্রতিনিধিঃ পুঠিয়ার বানেশ্বর হাটের জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক মুদি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মুদি ব্যবসায়ী মফিজ আলী বানেশ^র হাটের বণিক সমিতির অফিসের সিড়ির নিচে পলেথিন দিয়ে ঘিরে মুদি ব্যবসা করেন। স্থানীয় একটি গ্রæপের সাথে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বানেশ^র হাটের বণিক সমিতির সিড়ি সংলগ্ন জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। বিষয়টি স্থানীয় ও বণিক সমিতি এবং হাট কমিটির নজরে এলে তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে মৌখিক ভাবে জানান। অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর হোসেন নির্ঝর দখলকৃত জায়গায় ঘর নির্মাণ বন্ধ করে দেন। বর্তমানে ঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও বানেশ^র হাটের সবজি পট্টির ড্রেনের উপর জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। এসব জায়গায় পূর্বের সবজি বিক্রেতারদের বাদ দিয়ে অন্যদের টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ দিয়েছে স্থানীয় একটি দখলদার চক্র। দখলদার মফিজ আলী জায়গাটিতে দখলে বিষয়ে কাউকে টাকা পয়সা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন জানান, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে পলিথিন দিয়ে ঘিরে মুদির ব্যবসা করছি। বর্ষা এলে নিচের অংশ কার্দমাক্ত হওয়ায় সেখানে পাঁকা করা হয়েছে। এছাড়াও চারিদেক কয়েকটি ইটের গাঁথুনি দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহীর বৃহত্তর বানেশ্বর হাটের জায়গা প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দখল নিয়ে নিজস্ব গোডাউন তৈরি করেছেন। এ কারণে হাটের দোকান বসে ও কেনাবেচা করা হয় মহাসড়কের ওপর। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে উপর বৃহত্তর হাট বসায় তীব্র যানজট লেগেই থাকছে। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ও পথচারীদেরকে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। হাট ইজারার নামে প্রতি বছর সরকারের কোষাগারে যেমন কোটি কোটি টাকা জমা হয়, তেমনি পুলিশ, প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের পকেটেও ঢোকে লাখ লাখ টাকা। কিন্তু জনসাধারণের ভোগান্তি নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ফলে ভোগান্তির মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে মাঝে-মধ্যেই ঘটে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

সরকারি বিধি মোতাবেক হাটের জায়গায় কোনো ধরনের স্থায়ী ঘর নির্মাণ ও দখল অবৈধ। কিন্তু এলাকার প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা হাটের জায়গায় দোকানঘর ও গোডাউন নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে তাদের নিজস্ব ব্যবসা পরিচালনা করছেন। অনেকেই আবার গোডাউন ঘরগুলো ভাড়া ও বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা। বানেশ্বর হাটের জায়গা ক্রমেই বেদখল হচ্ছে। তাই স্থানীয় কৃষক ও ফড়িয়ারা ফসলাদি বিক্রির জন্য মহাসড়কের দুপাশ দখল করে বসছেন। ফলে বানেশ্বর হাটের দিন ভোর থেকে সারা দিন প্রায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে।

ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কটি এমনিতেই অনেকটা ব্যস্ততম। নাটোর পর্যন্ত দুই লেন হওয়ায় এই রাস্তাটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে মাঝে-মধ্যেই ঘটে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। কৃষি ফসল কেনা-বেচার জন্য উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সর্ববৃহৎ হাটের মধ্যে একটি হলো বানেশ্বর। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানাগেছে, বানেশ্বর হাট প্রায় সাড়ে ১১ একর জমির উপর অবস্থিত।

এই বাজারের একেবারে মাঝখান দিয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক। বাজার এলাকার কিছু অংশ ফোর লেন হলেও বাঁকি অন্তত ৯০ ভাগই দুই লেন মহাসড়ক। আবার এই বাজারের পাটসহ অধিকাংশ কৃষিপণ্য বিক্রি হয় রাস্তার দুই ধারে।

এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, বানেশ্বর হাটের জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়ার পর তার বন্ধ করে দিয়েছি। এছাড়াও তিনি বলেন, বানেশ্বর তহসিল দারকে হাটের জায়গা দখলের তালিকা করার জন্য জানানো হয়েছে। সেই তালিকা মোতাবেক পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এ কর্মকর্তা জানান।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *