আঞ্চলিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান তারেক রহমানের

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ বিরোধী উসকানিমূলক অপপ্রচারের ফলে সৃষ্ট আঞ্চলিক উত্তেজনায় দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি সোমবার তার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে (এক্স ও ফেসবুক) দেয়া এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর বাংলাদেশকে ঘিরে ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘উসকানিমূলক ও রাজনৈতিক বক্তব্যে’ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে তারেক রহমান এই ধরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ভারতীয় ভাষ্যকাররা ‘অপতথ্যের ধূম্রজাল সৃষ্টি করে’ বাংলাদেশ বিরোধী মনোভাবকে উসকে দিচ্ছে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

আগরতলায় বাংলাদেশী কনস্যুলেটে সাম্প্রতিক হামলাকে বিভ্রান্তির ফলে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতার প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দাবি করেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ আরো গভীর করার ঝুঁকি তৈরি করছে বলে সতর্ক করেন।

তারেক লিখেছেন, ‘আন্তর্জাতিক অংশীজনদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে প্রায় দুই শ’ মিলিয়ন জনসংখ্যার বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে অন্য কোনো দেশের কোনো লাভ নেই।’

তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক দল এবং নেতৃবৃন্দ থেকে মুক্ত হয়ে দু’দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

তারেক রহমান শেখ হাসিনার প্রস্থান পরবর্তী পরিস্থিতির বোঝার জন্য এবং ভারতে তার ফ্লাইটের পর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি বোঝার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও ধর্মীয় সম্প্রীতি ও আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের নীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ মূলত ধর্মীয় সম্প্রীতি ও আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের দেশ ছিল এবং থাকবে। এদেশে জাতি, বর্ণ ও ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতা সুরক্ষিত রয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা উসকানির ফাঁদে বাংলাদেশীদের পা না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সংযমের আহ্বান জানান।

তিনি লিখেছেন, ‘আমি আমার সহকর্মী বাংলাদেশীদের সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের জন্য ও কোনো ধরনের উসকানির ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’

জাতি যখন হাসিনা-পরবর্তী রাজনৈতিক দৃশ্যপট ও ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক সমস্যা মোকাবিলা করছে, ঠিক সেই সময়ে বিবৃতিটি দেয়া হয়েছে।

তারেক রহমান বিরোধীদের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তোলার এই অপচেষ্টাকে মোকাবিলা করে সবার প্রতি শান্তি বজায় রাখার এবং ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে ভারতের সাথে শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গড়ে তুলতে বলেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, তারেকের মন্তব্য বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের জটিলতাগুলোকে তুলে ধরে, যা প্রায়ই বৃহত্তর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পরিবর্তে পৃথক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। তার সংযমের বার্তা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিধ্বণিত হয় কি না, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
সূত্র : বাসস

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *