শাহজাদপুর যমুনা নদীর ভাঙ্গনে হারিয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি ও ঘরবাড়ি দুশ্চিন্তায় এলাকাবাসী

রাজশাহী লীড
মো: ইউনুছ আলী, সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর  উপজেলায়  যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে  তিন ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম। এরই মধ্যে এসব গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমি, বাড়িঘর, মসজিদ, মাদরাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো সময় পুরো গ্রাম বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।শুক্রবার  (১৬ মে)সরোজমিনে গিয়ে  স্থানীয় বাসিন্দাদের  সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১ মাস ধরে ভাঙন শুরু হলেও সম্প্রতি ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করায় নদীর ভাঙনে আশপাশে অর্ধশত বসতঘর ও শত শত বিঘা আবাদি জমি  বিলীন হয়ে গেছে। লোকজন বসতভিটা ভেঙে নিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে।
ভাঙনকবলিত গ্রামগুলো হলো- উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের চরঠুটিয়া, সোনাতনী ইউনিয়নের মাকড়া, ধীতপুর, কুড়সী, বারপাখিয়া, বড় চামতারা, বানতিয়ার, গালা ইউনিয়নের বৃ-হাতকোড়া ও মোহনপুর ।ধীতপুর গ্রামের শামচুল  বলেন, এবার চরে পটল, বেগুন, ধান, বাদাম, মাষকালাই,  সবজি ও ধনিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলানো হয়েছিল। সব পানিতে ডুবে গেছে। ১৯৮৮ সাল থেকে ভাঙা শুরু হয়ে ১১ বার ভাঙলো। ২০২৫ সালেও বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীতে চলে গেছে। এখন কোথায় যাবো, সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।একই গ্রামের ৫০ বছরের করিম  বলেন, এ পর্যন্ত ১৪ বার বসতভিটা ছাড়া হলাম। সব কিছু যমুনায় বিলীন হয়েছে।সোনাতনী ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মনিরুল   বলেন, বালুমাটিতে এবার ব্যাপক ফসল হয়েছিল। কিন্তু ভাঙনের কবলে পড়ে সবকিছু নদীতে চলে গেছে। তিনি কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ভাংন রোধে ব্যাবস্থ নেওয়ার অনুরোধ জানান।
কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, গত এক বছরে সোনাতনী ইউনিয়নের শ্রীপুর থেকে বারোপাখিয়া পর্যন্ত ৫-৬টি গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। তবুও ভাঙনরোধে কোনো বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি পাউবো।কুরসী গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীর ভাঙনে কুরসী গরুর হাট, মসজিদ, মাদরাসা, বাড়িঘর ও ফসলি জমি সবকিছু বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই ভাঙন রোধ করা না গেলে অসহায় হয়ে পড়বে মানুষ। শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেরিন আহমেদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ৬ বছরে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ২৮০ হেক্টর ফসলি জমি যমুনা নদীগর্ভে চলে গেছে। আবার নতুন করে যেসব ফসলি জমি ভেঙে যাচ্ছে, সেসব জমির মালিক বড় ক্ষতির মধ্যে পড়ছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও)কামরুজ্জামান বলেন, ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ ও পাউবোর সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *