উজ্জ্বল রায়, নড়াইল: নড়াইলে আট লাখ জনগণের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালে ১৩ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতলের চিকিৎসা কার্যক্রম। অভিযোগ উঠেছে, জনবল সংকট থাকায় চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সামান্য সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসলেও রোগীদের ডাক্তারের অভাবে পাঠানো হচ্ছে পার্শ্ববর্তী জেলা যশোর, খুলনা, অথবা রাজধানী ঢাকায়। এতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, জানা গেছে, ১শ’ শয্যার হাসপাতালে বিশেষজ্ঞসহ চিকিৎসক থাকার কথা অন্তত ৩৯ জন। সেখানে আছেন মাত্র ১৩ জন। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সপ্তাহে মাত্র দুইদিন রোগী দেখেন। এছাড়া ৭৮ জন নার্সের মধ্যে আছে ৫৫ জন, আর টেকনিশিয়ান অ্যাসিসট্যান্টসহ ৪র্থ শ্রেনীর অন্তত ২০৮ জন কর্মচারীর স্থলে আছে মাত্র ৯২ জন। হাসপাতালের বিভিন্ন রোগীদের মাঝে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, হাসপাতলে মোট বেড রয়েছে ১০০টি। রোগীর ভিড়ে প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ১শ’ জন বেডের অভাবে নিচে ভর্তি থাকেন তারা কেউই খাবার পান না। প্রতিদিন হাসপাতলে ৬-৭শ’ রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নেন। তবে একজন রোগীকে কোনো ডাক্তারই দুই মিনিটের বেশি সময় ধরে চিকিৎসা দিতে পারেন না, কারণ দুই-তিন ঘন্টা সময়ের মধ্যে আউটডোরে একজন ডাক্তারকে প্রতিদিন শতাধিক রোগী দেখতে হয়।
সবার জন্য মৌলিক সেবা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধ পরিকর হলেও আট লাখ লোকের জন্য নড়াইলে নেই স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা। জেলার একমাত্র আধুনিক সদর হাসপাতালটি ২০০৭ সালে ১০০ বেডে উন্নীত করার ঘোষণা দেয়া হলেও আজও তা চলছে ৫০ শয্যার ঘাটতি লোকবল দিয়ে। অবকাঠামোগত কিছু উন্নয়ন হলেও অন্যদিকগুলোর কোনো উন্নয়ন হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের প্যাথলজিতে পরিচিত রোগী ছাড়া কেউ সেবা পায়না। হাসপাতালে ভর্তি হয়েও বাইরে থেকে পরীক্ষা করে আসা রোগীর সংখ্যাই বেশি অথচ পরীক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি হাসপাতালে রয়েছে। এ হাসপাতালের টেকনিশিয়ানরাই বাইরের প্যাথলজিগুলোতে কাজ করেন। হাসপাতালের আধুনিক যন্ত্রপাতির প্যাথলজি বেলা ১২টার পরে বন্ধ হয়ে গেলেও ডাক্তার, রোগী আর হাসপালের টেকনিক্যাল কর্মচারীদের উপস্থিতিতে জমজমাট বিভিন্ন বেসরকারি প্যাথলজি সেন্টারগুলো।
হাসপাতলের আরএমও আ ফ ম মশিউর রহমান বাবু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা জনবল সংকটে সাধারণ রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছিনা। প্রতিদিন একজন ডাক্তারকে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থেকে শুরু করে আউটডোর, জরুরি বিভাগসহ সব জায়গাতেই সেবা দিতে হচ্ছে। চিকিৎসক চেয়ে আমরা বার বার উপর মহলকে লিখিতভাবে জানালেও তার কোনো সুরাহা হয়নি।