বিবিসি জানায়, পৃথিবীর অনেক দেশের মত সুইজারল্যন্ডেও চিকিৎসাকাজে গাঁজার ব্যবহার বৈধ, তবে গাঁজা চাষ এবং বিক্রি করা এখনো সেখানে আইনগতভাবে অবৈধ। তাই বিশেষ অনুমতি ছাড়া খামারীরা এখানে গাঁজা চাষ করতে পারে না। লুডিয়াস বলেন, ‘আমার খামারের গাঁজা সরাসরি সেবনের জন্য বিক্রি করা হয় না। সুইজারল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিশেষ একটি অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে গাঁজা চাষ করি। সরকারি অনুমোদন পাওয়া ফার্মাসিস্টরা গাঁজাকে তরল অবস্থায় নিয়ে আসেন। তারপর শুধুমাত্র ডাক্তার অনুমোদিত ব্যক্তিরা কিনতে পারেন তা।’
সেরকম একজন সরকার অনুমোদিত ফার্মাসিস্ট ড্যানিয়েলা আইগামেন জানান ওষুধ হিসেবে গাঁজা ব্যবহারের শুরু হাজার বছর আগে থেকে। আইগামেন বলেন, ‘ওষুধ হিসেবে গাঁজা ব্যবহার শুরুর প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় খৃষ্টের জন্মের ২৭০০ বছর আগে চীনে। চীনের একজন সম্রাট চেন-নুং ম্যালেরিয়া ও বাত সংক্রান্ত রোগ নিরাময়ে গাঁজা ব্যবহার করেছিলেন’। আইগামেনের কাছ থেকে ওষুধ হিসেবে গাঁজা কেনেন সুইজারল্যান্ডের কয়েকশ’ মানুষ।
তাদেরই একজন বার্নাডিক্ট নিকলাউস, যিনি গাঁজা ব্যবহার করেন শরীরের ব্যাথা উপশমের জন্য। নিকলাউস বলেন, ‘স্কলিওসিস রোগের কারণে ছোটকাল থেকেই আমার পিঠে ও কোমড়ে তীব্র ব্যাথা হতো। ব্যাথা উপশমের জন্য সবধরণের ওষুধ আমাকে দিয়েছে ডাক্তাররা, এমনকি মরফিনও। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। একসময় মনে হতো এই ব্যাথা না কমলে জীবনই আর রাখবো না। গাঁজা ব্যবহার করার পর থেকে তার ব্যাথা অনেক সহনীয় পর্যায়ে এসেছে।’
সুইজারল্যান্ডে তার মতো অনেকেই নানা ধরণের রোগের প্রতিকার পেয়েছেন গাঁজা ব্যবহার করে। এসব কারণে বিশ্বের অনেক দেশই চিকিৎসা কাজে গাঁজার ব্যবহার বৈধ করেছে। সুইজারল্যান্ডে এরকম ব্যবহার বৈধ হলেও এ বিষয়ে আরো গবেষণা চালানোর তাগিদ দিচ্ছে সরকার। সুইজারল্যান্ডে গাঁজাকে বৈধতা দেয়ার পক্ষের মানুষ বলছে গাঁজা বৈধ হলে চিকিৎসাকাজে ব্যবহারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক থেকেও লাভবান হবে দেশ। আর বিপক্ষের লোকজনের বক্তব্য এটিকে এখনো বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই মাদক হিসেবে মনে করা হয়। আর চিকিৎসক ও রসায়নবিদদের মতে, আর্তমানবতার খাতিরে অন্তত চিকিৎসাকাজে গাঁজাকে বৈধতা দেয়া উচিৎ।