স্বদেশ বাণী ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, আকাশ সংস্কৃতির ডামাডোলে গা ভাসিয়ে দিলে চলবে না, বরং তা থেকে ভালো দিকগুলোকে গ্রহণ করতে হবে এবং মন্দ দিকগুলোকে বর্জন করতে হবে।
বুধবার নেত্রকোনায় আন্তর্জাতিক লোকসংস্কৃতি উৎসবে এই আহ্বান জানান তিনি।
আবদুল হামিদ বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির প্রসারের ফলে সারাবিশ্ব একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে। আকাশ সংস্কৃতি এখন বাস্তবতা। বিভিন্ন দেশ ও জাতির সংস্কৃতিতে এর প্রভাবও দ্রুত বিস্তার করছে। সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনা ও ধ্যান-ধারণাও বদলাচ্ছে একই গতিতে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সারা বাংলাদেশে লোকজ সংস্কৃতির উপাদানকে সংগ্রহ করে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। আর তা হলেই বহির্বিশ্বে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ফুটে উঠবে। এ লক্ষ্যে কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, নির্মাতা, সংগ্রাহক, গবেষকসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসবে বলে আশা রাখেন তিনি।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম আয়োজিত এই উৎসবে আবদুল হামিদ বৃহত্তর ময়মনসিংহ ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি-লোকাচারের স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এ অঞ্চলের লোকগীতি বা পালাগান বাংলার অতি প্রাচীন ও সুপরিচিত একটি গাঁথা বা ধারা। বাংলা সাহিত্যে প্রথম গদ্য সাহিত্য রচয়িতা ভারতচন্দ্র বা ঈশ্বরগুপ্তের পূর্বযুগে এ দেশে পালাগানের যথেষ্ট কদর ছিল।
লোক সংস্কৃতি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, লোকগানের চলমান ধারা বহতা নদীর মতো, আজো বাংলার পথে প্রান্তরে ভাওয়াইয়া-ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, বাউলগীতি ও পালাগান ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির বিশাল প্রান্তরে আমাদের অমূল্য গাঁথাগুলো জাতিসত্ত্বার প্রয়োজনে সংরক্ষণ করা দরকার।
মুক্তারপাড়া মাঠে ওই অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লোকগবেষক অধ্যাপক যতীন সরকার। বক্তব্য রাখেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সবুজ কলি সেন, লোক সাহিত্য গবেষক ড. দীনেশচন্দ্র সেনের প্রপৌত্রী দেবকন্যা সেন।