‘ছাত্রলীগ মারতে এলে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা তালি দিয়ে উৎসাহ দেন’

জাতীয় শিক্ষা

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌসদুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার সময় উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা উৎসাহ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস।

অধ্যাপক সাঈদ আন্দোলনরত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ মঞ্চের অন্যতম মুখপাত্র ও সংগঠক। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে ছাত্রলীগের হামলায় তিনি আহত হন।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ আন্দোলনরতদের মারতে এলে উপাচার্যপন্থী আমার সহকর্মীরা হাততালি দিয়ে তাদের স্বাগত জানায় এবং উৎসাহ দেয়। এই দেশে এমনই হওয়ার কথা? এখানে এটাও সম্ভব, শিক্ষকরা অন্য শিক্ষকের গায়ে হাত তুলতে ছাত্র-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দেন। আমি কারও কাছে কোনও নালিশ দেবো না, দিতে চাই না।’

হামলার বর্ণনা দিয়ে অধ্যাপক সাঈদ বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে ভিসির বাসভবনের সামনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছিলাম। উপাচার্যপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একটি দল আমাদের মাড়িয়ে যেতে চায়। এরপর বেলা ১২টার দিকে ছাত্রলীগ সেখানে গেলে দৃশ্যপট পাল্টে যায়। তারা অনেককে শিবির বলে তুলে নিয়ে যেতে চায়। অনেককেই টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে মারধর করে। আমরা বাধা দিতে চাই। এসময় দেখি কয়েকজন আমার পা ধরে টানছে। একপর্যায়ে আমাকে চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো। ধাক্কা দিয়ে ওখান থেকে বের করলো। একসময় দু-জন ছাত্র ও একজন কর্মচারী আমাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে জোর করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায়।’

মঙ্গলবার আন্দোলনরত শিক্ষক অধ্যাপক সাঈদের ওপর হামলা

তিনি আরও বলেন, ‘হামলার সময় উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা ধর ধর, মার মার বলে স্লোগান দেন। একজন জুনিয়র শিক্ষক একজন সিনিয়র শিক্ষককে ধমকাতে দেখেছি। আমি তাদের নাম বলতে চাই না।’

আক্ষেপ করে অধ্যাপক সাঈদ বলেন, ‘এই সমাজ, রাষ্ট্র এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে কারও কাছে কিছু প্রত্যাশা করি না। কোনও প্রতিষ্ঠান কাজ করছে না। ব্যক্তিগত সম্মান, মূল্যবোধ কাজ করছে না। সবকিছু দলীয়ভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’

দুর্নীতির অভিযোগে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন চলছে। সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাসভবনের সামনের ফটকে অবস্থান নেন তারা। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় আট জন শিক্ষকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। হামলা চলাকালে উপাচার্যের বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশকে নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *