রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় থাকলেও অর্থাভাবে ভর্তি অনিশ্চিত কুড়িগ্রামের আরাফাতের

জাতীয় লীড শিক্ষা

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: প্রাথমিক সমাপনীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি, জেএসসিতে জিপিএ-৫ সহ সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি। এরপর এসএসসিতে জিপিএ-৫ (গোল্ডেন) সহ জেনারেল স্কলারশিপ।

বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন এইচএসসিতে জিপিএ-৫ না পেলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান অনুষদে (সি-ইউনিট) মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে (১০৫১)। কিন্তু পিতার আর্থিক দৈন্যতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও পড়াশোনা করাই এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে আরাফাতের।

মো. আরাফাত আমিন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের কালপানি বজরা গ্রামের মজনুর রহমান আমিন ও নূর জাহান বেগম দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান। আরাফাত ২০১৭ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৯ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়।

সন্তানদের পড়াশোনার সুবিধার কথা চিন্তা করে জেলা শহরের পৌর এলাকার পালপাড়ায় এক আত্মীয়ের জায়গায় ছাপড়া ঘর তুলে বসবাস করছেন আরাফাতের বাবা-মা। দশ বছর ধরে সেখানেই বাস করছেন তারা। উদ্দেশ্য, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার করানো।

আরাফাতের মা নূর জাহান বেগম বলেন,‘আমার তিন সন্তানই মেধাবী। আরাফাত বড় ছেলে। ছোট বেলা থেকেই ও (আরাফাত) পড়াশোনায় অনেক মনোযোগী। এসএসসিতে ভালো ফলাফল করার পর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের শিক্ষা বৃত্তি দিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছে আরাফাত। কিন্তু এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেও আমাদের সেই সামর্থ নেই। তাই ওর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় আছি।’

কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মোড় সংলগ্ন বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আরাফাতের বাবার পক্ষে তিন সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে জানিয়ে আরাফাতের মা আরও বলেন, ‘ওর বাবা দিনে দুই থেকে চারশ’টাকা রোজগার করেন। এই টাকা দিয়ে সংসার খরচ চালানোর পর ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ মেটানো সম্ভব হয় না। তাই সমাজের সামর্থবান কেউ ওর (আরাফাতের) পড়াশোনায় সহযোগিতা করলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকবো।’

আরাফাতের বড় বোন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আর ছোট ভাই কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।

আরাফাত জানায়, টাকার অভাবে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ হয়নি। ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েছে কেবল। এর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় স্থান পায়। কিন্তু টাকার সমস্যার কারণে তার ভর্তিই এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

আরাফাতের ভাষ্য, ‘আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে মানুষের মতো মানুষ হতে। আমার বাবা-মায়ের সংসারে যে আর্থিক অনটন তাতে করে আমার ভর্তিসহ পড়াশোনার খরচ যোগানো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সম্ভব হলে আমাকে কেউ সহায়তা করুন।’

ভবিষ্যতে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করার ইচ্ছার কথা জানিয়ে আরাফাত বলেন, ‘ভবিষ্যতে দেশ সেবার পাশাপাশি আমি বাবা-মায়ের কষ্টের জীবনের অবসান ঘটাতে চাই। আমার জন্য সবই দোয়া রাখবেন যেন ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে জীবন চালাতে পারি।’

আরাফাতকে সহায়তা করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন এই নম্বরে- ০১৭৮০৬৩৪৭৫১। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।.

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *