রাবির একাদশ সমাবর্তন উপলক্ষে গ্র্যাজুয়েটদের পদচারণায় মুখরিত ক্যাম্পাস

রাজশাহী লীড শিক্ষা

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) একাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে শনিবার (৩০ নভেম্বর)। সমাবর্তনে অংশ নিতে ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসে এসেছেন গ্র্যাজুয়েটরা। বিভাগ থেকে গাউন ও সমাবর্তন টুপি সংগ্রহের পর শুরু হয়েছে মহড়া।

নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েটদের আনাগোনায় ক্যাম্পাসের প্যারিস রোড, ইবলিস চত্বর, সাবাশ বাংলাদেশ চত্বর মুখরিত হয়ে উঠেছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) একাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে আজ । সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। এতে বক্তা হিসেবে থাকবেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক রঞ্জন চক্রবর্তী। সমাবর্তন ঘিরে ইতোমধ্যে সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সাজানো হয়েছে ভিন্নরূপে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ভবনকে নতুন করে রঙ করা হয়েছে। সাজানো হয়েছে রঙ-বেরঙের আলোকসজ্জায়। আবাসিক হল ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোকেও সাজানো হয়েছে। আঁকা হয়েছে নানা রকমের আলপনা। সর্বত্র সমাবর্তনের আমেজ বিরাজ করছে।

সমাবর্তনে এসেছেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী গোলাম রসুল রনি। প্যারিস রোডে মায়ের মাথায় সমাবর্তন টুপি দিয়ে ছবি তুলে নিজের স্বপ্ন পূরণ করলেন তিনি।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন হোসেন বলেন, ভালোবাসার সমাবর্তন। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো। ক্যাম্পাসে কাটানো দীর্ঘ পাঁচ বছর কীভাবে কেটে গেছে বুঝতেই পারিনি। ক্যাম্পাসের স্মৃতিগুলো খুব মনে পড়ে। প্যারিস রোডকে খুব মিস করি। যখন বিভাগ থেকে গাউন নিচ্ছিলাম তখন নিজেকে শিক্ষার্থী বলেই মনে হয়েছে। ক্যাম্পাস আগের চেয়ে অনেক সুন্দর এখন।

দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসে ফিরে পুরোনো বন্ধুদের পেয়ে সবাই যেনো আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ছেন। ক্যাম্পাস মাতিয়ে তোলার দিনগুলোতে ফিরে যাচ্ছেন সবাই। বন্ধুদরে সঙ্গে আবার একসঙ্গে বসে গল্প করার সুযোগ পেয়েছেন। সাবেকদের এমন গর্বিত পদচারণায় যেনো উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে পুরা ক্যাম্পাস জুড়ে।

সায়মা আশরাফি নামে এক গ্র্যাজুয়েট বলেন, আমি ২০১৫ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেছি। শিক্ষার্থী হিসেবে অনুভূতি আর এখনকার অনুভূতি একদমই আলাদা। দীর্ঘদিন পর বিভাগের শিক্ষক, সহপাঠী, বিভাগের জুনিয়রদের দেখে খুবই আনন্দ হচ্ছে। একবারও মনে হচ্ছে না আমরা এখান থেকে চলে গেছি।

গ্র্যাজুয়েটরা জানান, দূরে থাকলেও ক্যাম্পাসকে আগের মতোই ভালোবাসেন তারা। ক্যাম্পাসে কাটানো সময়, আড্ডা-গল্প, ক্যাম্পাস চষে বেড়ানো এসব আর ফিরে আসবে না। তারপরেও ক্ষণিকের জন্য অতীতকে বর্তমানে ফিরে পেতে আগ্রহ-উদ্যোমের কমতি নেই গ্র্যাজুয়েটদের। তাদের চোখে-মুখে যেন পুরনো দিনগুলোকে ফিরে পাওয়ার ভাবনা।

সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও সমাবর্তন বক্তা হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রঞ্জন চক্রবর্তী উপস্থিত থাকবেন।

জানা গেছে, এবারের সমাবর্তনে কলা অনুষদের ১০ বিভাগের ৬৬৬ জন, আইন অনুষদের ৮৯ জন, বিজ্ঞান অনুষদের ৮ বিভাগের ৩৭৭ জন, বিজনেস স্টাডিস অনুষদের ৪ বিভাগের ৫০৫ জন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ৯টি বিভাগের ৫৮২ জন, জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ৬ বিভাগের ৩১০ জন, কৃষি অনুষদের ৮৫ জন, প্রকৌশল অনুষদের ১৩৫ জন, চারুকলা অনুষদের ৪৩ জন গ্র্যাজুয়েট এবং বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের ৬ জন এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণে নিবন্ধন করেছেন। এছাড়াও এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রির জন্য যথাক্রমে ৫১১ ও ১২৩ জন নিবন্ধন করেছেন।

রাবির প্রস্তুতির বিষয়ে জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার বলেন, ‘সমাবর্তনের জন্য সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু উৎসবের মাহেন্দ্রক্ষণ চলছে। আমরা আশা করছি খুবই জাঁকজমকপূর্ণভাবে সমাবর্তনটি উদযাপন করতে পারব।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *