আখ ক্রয়ের জন্য ভাড়া দেওয়া হয় স্কুলের মাঠ : শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ক্ষোভ প্রকাশ

রাজশাহী লীড

পুঠিয়া প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়ার সরিষাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন থেকে আখ ক্রয়ের পুরো মৌসুম খেলার মাঠটি ভাড়া দিচ্ছে নাটোর সুগার মিলকে। তাই প্রতি বছর কয়েক মাস স্কুল মাঠটিতে খেলাধুলা বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ।

খেলার মাঠ বরাদ্দ না দিতে স্থানীয় লোকজন একাধিকবার স্কুল কর্তৃপক্ষকে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দিয়েও সমাধান হয়নি। অবশেষে তারা গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর থেকে আখ মৌসুম শুরু হলেই সরিষাবাড়ী হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ খেলার মাঠটি কয়েক মাসের জন্য নাটোর সুগারমিলের নিকট ইজারা দেন। মিল কর্তৃপক্ষ পুরো মাঠটি দখল নিয়ে আখ ক্রয় কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করে আসছেন। এর ফলে টানা দীর্ঘ কয়েকমাস মাঠে স্কুলের ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলার পাশাপাশি সাধারণ সর্ব সাধারণ মানুষেরও চলাচল বন্ধ থাকে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আসলাম হোসেন বলেন, এখানে একই স্থানে হাইস্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অনেক বছর থেকে এই খেলার মাঠে আখ ক্রয় কেন্দ্র থাকায় বছরের কয়েকমাস স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলার সমস্যা হয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা গত ১০/১২ দিন আগে একটি মিটিং করে এই মাঠে আর আখ ক্রয় কেন্দ্র না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী বছর থেকে পাশে কোথাও আখ ক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

সরিষাবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নুরুন নাহার রিনা বলেন, মাঠটি হাই স্কুলের হলেও আমাদের বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা এখানে খেলাধুলা করে। প্রতিবছর আখ ক্রয় মৌসুম শুরু হলে মাঠে নামতে বাচ্চাদের যেতে নিষেধ করা হয়। সার্বক্ষনিক স্কুলের সামনে দিয়ে আখ পরিবহন গাড়ীর যাতায়াতের কারণে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে আমরা খুব আতঙ্কে থাকি।

সরিষাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফসার আলী সরকার খেলার মাঠ ইজারা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি এই স্কুলের দ্বায়িত্বে এসেছি মাত্র কয়েক বছর হচ্ছে। আমি যোগদান করার অনেক আগ থেকে এই মাঠ সুগারমিলের কাছে বরাদ্দ দেয়া হয়। মিল কর্তৃপক্ষ আমাদের সামান্য কিছু টাকা দেয়।

আর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে গত কয়েকদিন আগে সকলে মিলে আমরা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর সেটা হলো এ মৌসুমের পর আমরা আর খেলার মাঠ বরাদ্দ দিব না।

তবে স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এবাদুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওলিউজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি লোকমূখে শুনেছি। তবে আমি গত কয়েকদিন ছুটিতে ছিলাম। আজ জেলার আইনশৃংখলার সভায় আছি। সে সময় কেও লিখিত কোনো অভিযোগ দিয়েছেন কিনা সেটা খোজ নিচ্ছি।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *