ভাড়া নিয়ে বিবাদের জেরে চলন্ত বাস থেকে ফেলে যাত্রী হত্যায় বাসের ২ সহকারী আটক

জাতীয় লীড

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদীতে ভাড়া নিয়ে বিবাদের জেরে চলন্ত বাস থেকে যাত্রী সুমন হোসেনকে ধাক্কা দিয়ে সড়কে ফেলে হত্যার ঘটনায় বাসের দুই সহকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় দিকে দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদাহ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে নাসিম উদ্দিন (২২) ও গোড়ার পাড়া গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে রোকনুজ্জামান (৩৮)।

এদিকে সুমন হোসেনকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে হত্যার ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় শনিবার মামলা হয়। নিহতের স্ত্রী রুমা খাতুন মামলাটি করেন। এরপর ৬ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করে।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, সুমন হোসেন বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে রূপপুর থেকে ভেড়ামারা যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। দ্রুত পৌঁছানোর জন্য ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মেহেরপুরের গাংনীগামী সুপার সনি পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। এ সময় বাসের চালকের সহযোগীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে তার বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চালকের দুই সহযোগী সুমনকে মারপিট করেন।

বাসটি লালন শাহ সেতুর পাকশী টোল প্লাজা পার হতেই দুজনে তাকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এ সময় চালক তার ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে যান। চাকায় পিষ্ট হয়ে তিনি গুরুতর আহত হন। হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী জানান, সিসিটিভি ফুটেজের ছবি দেখে গাড়িটির নম্বর শনাক্ত করা হয়। এই সূত্র ধরেই মামলা দায়ের এবং দ্রুত তদন্ত চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

সুপার সনি পরিবহনের মালিক আসলাম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এখনই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলবেন বলেও জানান।

হত্যার শিকার সুমনের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায়। তিনি ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের ঝাউতলা গ্রামে শ্বশুরবাড়ির পাশে ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। পাকশীর রূপপুর মোড়ে একটি খাবার হোটেলে শ্রমিকের কাজ করতেন। নিহত সুমনের সংসারে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে অষ্টম শ্রেণি ও মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সুমনই সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন।

সুমনের লাশ শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে তার নিজ বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামে দাফন করা হয়েছে।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *