ইমরান খানের মতো হতে চান না মাশরাফি

খেলাধুলা

তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট তারকা হতে পারেন, কিন্তু তাই বলে নিজেকে আরেক ইমরান খান মনে করেন না মাশরাফি বিন মর্তুজা৷ সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন একসময় নিজের দেশকে বিশ্বকাপ এনে দেয়া ক্রিকেট তারকা খান৷

বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে একটি আসন থেকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ক্রিকেট তারকা মাশরাফি বিন মর্তুজা৷ মূলত ক্রীড়াঙ্গনের আরো উন্নতি এবং দাতব্য কাজে নিজেকে আরো সম্পৃক্ত করতে রাজনীতিতে জড়িয়েছেন বলে জানান তিনি৷ তরুণদের রাজনীতিতে আসাটা জরুরি বলেও মনে করেন এই ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব৷

ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মাশরাফি বলেন, ‘‘সত্যি বলতে কী, ইমরান খান যে পর্যায়ে পৌঁছেছেন, মানুষ চাইলেও সবসময় সেই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে না৷”

তিনি বলেন, ‘‘আমি যেহেতু একজন ক্রীড়াবিদ, তাই ক্রীড়াঙ্গনের জন্য কিছু করার আগ্রহ আছে আমার৷ আমার আশা এখানে সমীবাদ্ধ৷ আমি আমার অঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী৷”

বাংলাদেশের নড়াইল জেলার ছেলে মাশরাফি বিন মর্তুজা৷ সেখানকার একটি আসন থেকেই নির্বাচনে লড়ছেন তিনি৷ ইতোমধ্যে এলাকায় ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ নামের একটি দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি৷ সংস্থাটি বিভিন্ন হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স দান করাসহ কৃষকদের উচ্চ ফলনশীল ধানের বীজ সরবরাহ পর্যন্ত নানা উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে৷

প্রসঙ্গত, ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদে রূপান্তরের বিষয়টি দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন কিছু নয়৷ তবে খেলা থেকে পুরোপুরি অবসর নেয়ার আগেই রাজনীতিতে সরাসরি প্রবেশের বিষয়টি বিরল৷ বর্তমানে বাংলাদেশের একদিনের ক্রিকেটের জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি৷ আসন্ন বিশ্বকাপেও দলকে নেতৃত্ব দেয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি৷

ইনজুরির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে সাফল্যের সঙ্গে ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাওয়া এবং তাঁর দেশপ্রেমের কারণে কোটি ভক্তের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন তিনি৷ অধিনায়ক হিসেবেও তাঁর সুখ্যাতি রয়েছে৷ তবে, তিনি সরাসরি রাজনীতিতে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর অনেকের কাছ থেকে বিরুপ প্রতিক্রিয়াও পেয়েছেন৷

অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাশরাফির পাতাগুলোতে এই বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্যের সংখ্যাই বেশি৷ তাঁর অনেক ভক্ত চান না বাংলাদেশের তাদের ভাষায় ‘অত্যন্ত নোংরা’ এবং ‘নর্দমার-মতো’ রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেকে সম্পৃক্ত করুক মাশরাফি৷ কেউ কেউ আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলে তিনি অংশ নেয়ার বিষয়টি পছন্দ করছেন না কেননা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীদের জেলে পাঠানো এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের কণ্ঠরোধের অভিযোগ রয়েছে৷

মাশরাফি অবশ্য এসব সমালোচনায় পিছু হটতে রাজি নন৷ আবার সমালোচকদের সমালোচনা করতেও আগ্রহী নন তিনি৷ অভিজ্ঞ এই ক্রীড়াবিদ বলেন, ‘‘আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই, যেসব মানুষ অন্য দল কিংবা অন্য রাজনৈতিক চেতনায় বিশ্বাসী, তাদের আমি অসম্মান করি না৷”

তিনি বলেন, ‘‘যদিও আমি আমার দলকে হৃদয়ের সর্বস্ব দিয়ে সমর্থন করি, আমার তাদের (সমালোচকদের) প্রতিও শতভাগ সম্মান রয়েছে এবং সেটা ভবিষ্যতেও থাকবে৷”

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *