চাঁপাইনবাবগঞ্জে সুইসাইড নোটে চারজনের নাম লিখে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

রাজশাহী লীড

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড কর্তৃপক্ষের চাপেই রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী এনামুল হক নিজের নামে লাইসেন্স করা একনলা বন্দুক দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে ওই ব্যবসায়ীর জানাজায় ব্যাংক ম্যানেজার মোহাম্মদ শাহজাহান অংশ নিতে আসেন। আর ওই সময় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এনামুল হক (৬০) পৌর এলাকার পুরাতন বাজারের মেসার্স সাজ্জাদ আহম্মেদ এন্ড সন্স এর মালিক ও মৃত সাজ্জাদ আহম্মেদ এর ছেলে ।

সাজ্জাদ আহম্মেদ এন্ড সন্স এর ম্যানেজার শাহিন আলী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ইসলামী ব্যাংক চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার লিগ্যাল অ্যাডভাইজার অ্যাডভোকেট একরামুল হক বিভিন্নভাবে এনামুল হককে টাকা ফেরত দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। আইনজীবী এবং ব্যাংক ঋণের জন্য কর্তৃপক্ষের চাপের কারণে এই আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারনা করছি।

নিহত এনামুল হকের ভাই সাহাদাত বলেন, ব্যাংকে ঋণ নিতে হলে মরগেজ দিতে হয়। আর মরগেজের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখায় ঋণ নিয়েছিল তিনি। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো না হওয়ায় ব্যাংক ঋণের পরিমাণ বেশি হয়ে যায়। আর এনামুল ভাই ব্যাংকে ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে মরগেজের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের কথা বলে তারা বলেন ‘মরগেজে শুধু করতে হয় তাই করেছি। আপনাকে ঋণ পরিশোধের জন্য টাকায় দিতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ব্যাংক অনেকগুলো মামলা করায় আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছিল সে। হাজিরা দেয়ার জন্য অফিসের ২য় তলায় ফ্রেস হবার জন্য উঠেই তিনি হতাশ ও আতংকিত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

নিহতের আরেক ভাই সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ব্যাংকের ম্যানেজারের কারণেই তার ভাইয়ের এই পরিণতি ঘটেছে।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জিয়াউর রহমান জানান, এনামুল হকের সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই সুইসাইড নোটে তিনি ব্যাংকের ঋণে হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ইঙ্গিত করে গেছেন। সুইসাইড নোটে তিনি সাবেক ম্যানেজার আকতার, অ্যাডভোকেট একরামুল, অফিসের দুই কর্মচারী কাজল ও মাহতাবের নাম লিখে যায়। তিনি আরো জানান, সদর থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ইসলামী ব্যাংক চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখা ম্যানেজার মোহাম্মদ শাহজাহান অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি টাকার জন্য কখনও চাপ বা হুমকি দেননি। বরং তিনি তাকে সহায়তার কথা বলেছিলেন।

উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে শহরের পুরাতন বাজারের মেসার্স সাজ্জাদ আহম্মদ এন্ড সন্স এর মালিক এনামুল হক ব্যাংক ঋণের কারণে হতাশ হয়ে নিজের নামে লাইসেন্স করা একনলা বন্ধুক দিয়ে আত্মহত্যা করেন। গতকালই ঋণখেলাপির দায়ে মামলায় তার হাজিরার দিন ছিল। সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *