স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের ওপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলাকারীর নাম রাসেল। তিনি যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে নগরীর মেহেরচন্ডি দায়রাপাঁক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত হন মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তান। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত মুক্তিযোদ্ধার নাম ওয়াহেদ উদ্দিন (৬৩) ও তার সন্তান নাহিন ইসলাম। আর হামলাকারী নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ড (পূর্ব) যুবলীগের সভাপতি আসাদ আলী এবং স্থানীয় বখাটে যুবক রাসেল।
ঘটনার পর আক্রমণকারীরা গা ঢাকা দিয়েছে। এ দিকে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে চন্দ্রিমা থানায় হত্যা চেষ্টাসহ চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন।
আহত মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহেদ উদ্দিনের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বছর খানেক আগে মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহেদ উদ্দিন মেহেরচন্ডী দায়রাপাঁক এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা রাসেলের মায়ের কাছ থেকে ৩ কাঠা জমি ক্রয় করেন। ওই জমিতে এ বছর বাড়ি নির্মাণে আলোচনা করেন মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহেদ উদ্দিন। খবর পেয়ে রাসেল তার চাচা আসাদ আলীকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন সময় ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে নয়তো বাড়ি নির্মাণের সমস্ত ইট আসাদের কাছ থেকে ক্রয় করতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে রাসেল।
শনিবার সকালে মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহেদ উদ্দিন বাড়ি নির্মাণের জন্য ট্রাকে করে ইট নিয়ে আসলে আগে থেকেই ওঁৎপেতে থাকা রাসেল এবং তার চাচা আসাদ বাধা দেয়। এ সময় ঘটনাস্থলে অভিযুক্ত দুইজন দলবল নিয়ে এসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহেদ চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে ও তার স্ত্রীসহ উপস্থিত পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করতে থাকে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা রক্তাক্ত হন। একপর্যায়ে হামলাকারীরা মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চাকু দিয়ে মারতে তেড়ে গেলে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নাহিন বাধা দেয়। এতে চাকুর আঘাতে আহত হয় নাহিন।
ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নাহিন ইসলাম বলেন, জমি কেনার পর থেকেই স্থানীয় যুবলীগের সভাপতি আসাদ ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। নয়তো তার কাছ থেকে বাড়ি তৈরির ইট নেওয়ার জন্য নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল। আমরা কখনোই তাদের এমন অন্যায় দাবিকে প্রশ্রয় দেইনি। শনিবার আমরা নিজেরা ইট কিনে আনলে তারা একদল মানুষ নিয়ে এসে তাদের কাছ থেকে কেন ইট নেওয়া হয়নি বলে আমাদের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে।
আমার বাবা সেই টাকা দিতে না চাইলে বাবাকে ও মাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালাজ শুরু করে। একপর্যায়ে আমাদের মারতে শুরু করে। আমি তাতে বাধা দিতে গেলে আমাকেও তারা মারধর করে। এ ঘটনায় আমার বাবার নাক দিয়ে অনর্গল রক্ত পড়তে থাকে। চাকু দিয়ে বাবাকে মারতে তেড়ে গেলে আমি রক্ষা করি।
এ সময় আমার হাত জখম হয়। বাবা এখন রামেকের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আসাদ ও রাসেলের নামে চন্দ্রিমা থানায় অ্যাটেম টু মার্ডার ও চাঁদাবাজির মামালা করা হয়েছে।
চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুম মুনির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার পর অভিযুক্ত দুইজন গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।
স্ব.বা/শা