ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে দফায় দফায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫ (ভিডিও)

জাতীয় লীড শিক্ষা

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: সিনিয়র-জুনিয়রের মধ্যে কথা কাটাকাটির জের ধরে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৫ ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় এলাকায় এ সংঘর্ষ ঘটে।

সংঘর্ষে রিয়ন, সাব্বির ও হিমেল নামের ছাত্রলীগ কর্মীসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে হিমেলের অবস্থা গুরুতর। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের জেবিয়ারকে বন্ধু ভেবে ডাক দেয় আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রলীগ কর্মী কামাল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কামালকে গালাগাল করে শাসায় জেভিয়ার। এ ঘটনায় কামাল দুঃখ প্রকাশ করলে তাকে কক্ষে গিয়ে দেখা করতে বলেন জেভিয়ার।

পরে কামাল তার বন্ধুদের নিয়ে জিয়াউর রহমান হলের ১২৭ নং কক্ষে জেবিয়ারের সঙ্গে দেখা করতে যায়। এসময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জেবিয়ারকে মারধর করে কামাল ও তার বন্ধুরা।

এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও শাহজালাল সোহাগ ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন।

পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে জিয়া হলের ২০৮ নম্বর কক্ষে কামাল অবস্থান করছে জানতে পেরে জেবিয়ার তার গ্রুপের ইমতিয়াজ, জয়, সালমান, হামজাসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে ওই কক্ষে আক্রমণ করে।

এ সময় কামাল কক্ষ থেকে বের না হওয়ায় দরজার তারা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। জেবিয়ার গ্রুপ কামালের কক্ষের জানালার কাজ ভেঙ্গে কক্ষে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।

এ ঘটনা জানতে পেরে বিভিন্ন হলে থাকা কামালের পক্ষের ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে জেবিয়ার পক্ষের কর্মীদের সংঘর্ষ বাঁধে।

এসময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের হাতে দেশিয় অস্ত্র, লোহার রড়, স্টাম্প, এবং কাঠ ও লাঠিসোঠা লক্ষ্য করা যায়।

এদিকে ছাত্রলীগ কর্মী ইমতিয়াজের কক্ষ (৪১৫) ভাংচুর করে অপর পক্ষের কর্মীরা। এ ঘটনার পর সাদ্দাম হলেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

পরে ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর হোসেন আলো, আবু হেনা, ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত, বিপুল খান এবং অনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

সংঘর্ষের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনাস্থলে প্রক্টর উপস্থিত থাকলেও নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান কতে দেখা যায়। সংঘর্ষ বেধে গেলে তিনি ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরিস্থিতি শান্ত হলে পরে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঘটনাটির বিষয়ে কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি ভুল করে বন্ধু ভেবে তাকে ডেকেছিলাম। পরে ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছি। তবুও তিনি আমাকে গালাগাল করে রুতে যেতে বলেন। আমি রুমে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে থাপ্পড় ও পেটে ঘুসি মারেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বন্ধুরা তাকে মারধর করে।’

জেভিয়ার বলেন, ‘আমি তাকে মারিনি, বরং সেই আমকে মেরেছে। এর প্রেক্ষিতে এ ঘটনা ঘটেছে।’

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত। আমরা বিষয়টি মিমাংসা করে দিই। তবুও কেন বা কাদের ইন্ধনে পরবর্তীতে আবার এ ঘটনা ঘটেছে তা জানা নেই। শাখা ছাত্রলীগের মূল নেতৃত্ব না থাকায় কর্মীরা উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়েছে।’

এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আরিফ বলেন, ‘আমাদের বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিন্তু ঘটনাস্থলে আসতে নির্দেশ দেয়া হয়নি।’

প্রক্টর প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতারা নিজেরাই বিষয়টি সমাধান করায় আমরা কোনো পদক্ষেপ নেইনি।’

দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে পুলিশ ঘটনাস্থলপ কেন আসল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পুলিশ ফোর্স নিয়ে প্রধান ফটকে প্রস্তুত ছিল। সূত্র: যুগান্তর।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *