বাগাতিপাড়ায় অন্ধ হয়েও বাড়ির সব কাজ  করে সমেজান

চারণ সংবাদ লীড
আল-আফতাব খান সুইট,নাটোর:  অন্ধ হয়েও ১০ বছর থেকে বাড়ির সব কাজ করছে নাটেরের বাগাতিপাড়ার সমেজান(৩৫)।
বয়স যখন সাত বছর অজানা এক রোগ চোখের আলো কেড়ে নেয় তার। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সমেজান উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের দেবনগর গ্রামের কলিম উদ্দিনের মেয়ে। বাবা-মা এবং দুই ভাই ও তিন বোন এর সংশার ছিল তাদের।
তার মা জরিনা বেগম প্রায় ১০ বছর আগে মারা যান।
ভাইয়েরা বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতেছে এবং বোন দুইটির বিয়ে হয়ে চলে গেছে নিজের সংসারে। ফলে বাবা মেয়ের সংসারের সব কাজ করতে হয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সমেজান।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বয়স যখন সাত বছর হঠাৎ ভিষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে সমেজান। কোন কিছুতেই সেরে উঠছিলোনা সে। শহরে ভালো ডাক্তারের কাছে নিয়ে পরীক্ষা করানোর পরে ডাক্তার বলেন তার একসঙ্গে ট্রাইফয়েড ও নিউমনিয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সেই অসুখ ভালো হলেও দুই চোখের মনি সাদা হতে থাকে। কিছুদিন পরে আর সে চোখে দেখতে পায়না। স্থানীয় ভাবে নানা চিকিৎসা করালেও তা আর ভালো হয়নি।
অভাবের সংসার হওয়ায় তাকে ভলো কোন ডক্তার দেখানো সম্ভব হয়নি। সেই থেকে তার চোখের মনি সাদা এবং সে অন্ধ হয়ে যায়। আরও জানা যায়, চোখে দেখতে না পেলেও বাড়ির সমস্ত কাজ করতে পারে সে। ভাত-তরকারি রান্না থেকে শুরু করে সবজি কাটা, মাছকাটা,মাংসকাটা,ঘর বাড়ি লেপে মুছে পরিষ্কার রাখা এমনকি গ্রামের অনেক মেয়েরা যে কাজটি করতে পরেনা সেই খেসারি শাক নিখুঁত ভাবে কাটতে পারে সে। গ্রামের অনেক মানুষ তার কাছ থেকে এই খেসারি শাক কেটে নিয়ে যায়।
তার বাবা কলিম উদ্দিন বলেন, সমেজানের স্মৃতিশক্তি ভালো সে খুব সহজেই সব কিছু মনে রাখতে পারে। এলাকায় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় না থাকায় সে লেখাপড়া শিখতে পারেনি। ছেলে মেয়েরা আলাদা হওয়ায় বাড়ির সব কাজ সে একাই করে। প্রথম দিকে সমস্যা হলেও এখন আর কোন সমস্যা হয়না। সে যেন কারো সংসারের বোঝা না হয় সেজন্য তাকে এখনো বিয়ে দেয়া হয়নি। আমার অবর্তমানে তাকে কে দেখবে সেই ভাবনা আমাকে সবসময় তাড়া করে বেড়ায়।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *