নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ৫’শ বছরের ঐতিহ্যবাহী বাঘার ঈদমেলা হলোনা

চারণ সংবাদ রাজশাহী লীড
আল-আফতাব খান সুইট, নাটোর: করোনা ভাইরাসের কারণে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ৫’শ বছরের ঐতিহাসিক বড়বাঘা ঈদ মেলা হলোনা। সারাবিশ্বের মতো এদেশেও করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি আকার ধারণ করায় মেলা কমিটি স্বেচ্ছায় এইবার মেলা আয়োজন করেননি। ফলে মেলার আয় থেকে পরিচালিত বাগাতিপাড়ার বড়বাঘা হেফজ মাদরাসাটি হুমকির মুখে পরলো বলে জানা গেছে।
জানা যায়, মুঘল সম্রাট আকবরের শাসন আমলে বাগদাদ থেকে হযরত শাহ সুফি মাওলানা মোবারক দানেশ মান্দ বিন হামিদ বিন দোল্লা বিন আব্বাস (রা.) কয়েকজন সঙ্গীসহ এই এলাকায় এসেছিলেন ইসলাম প্রচারের জন্য। এবং বসবাস শুরু করেছিলেন নাটোর থেকে ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে উপজেলার সাড়ে তিন কিঃমিঃ উত্তর-পশ্চিম কোণে। সেসময় জায়গাটি ছিল জঙ্গল। সেখান থেকেই তিনি ইসলাম প্রচার শুরু করেছিলেন। কথিত আছে, তিনি মানুষের অতীত ও ভবিষ্যৎ বলতে পারতেন। সেজন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে মানুষ আসত এবং ইসলামের বিভিন্ন দীক্ষা নিতেন তাঁর নিকট থেকে।
আরও জানা যায়, তাঁর এবং সঙ্গীদের মৃত্যুর পরে জায়গাটির নামকরন হয় বড় বাঘা। সেখানে সরকারি ও এলাকাবাসীর দানকরা জমিতে গড়ে উঠে একটি মসজিদ, ঈদগাহ, মাজার শরীফ, হেফজ মাদরাসা এবং প্রতি বছর ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে তিন থেকে সাত দিন ব্যপি ঈদ মেলা থেকে যা আয় হয় তা থেকে হেফজ মাদরাসার শিক্ষক বেতন ও উন্নয়ন মূলক কাজ করা হয়।
বড় বাঘা মসজিদ ও মেলা কমিটির সভাপতি তহির উদ্দিন জানান, প্রায় ৫’শ বছর যাবৎ ঈদুল ফিতরের দিন এই মেলা শুরু হয়ে তিন থেকে সাতদিন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তিনি আরও জানান, এর আগে ২০১৬ সালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহে বোমা হামলার কারণে প্রথম বারের মত বড়বাঘা মেলা হয়নি। আর এবছর করোনা ভাইরাসের কারণে দ্বিতীয় বারের মত মেলাটি হলোনা।
গত বছর মেলা থেকে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা আয় হয়েছিলো। যার সিংহভাগ খরচ করা হয়েছে বড় বাঘা হেফজ মাদরাসায়। এবার মেলা না হওয়ায় মাদরাসাটি চালাতে তাদের হিমসিম খেতে হবে বলেও জানান তহির উদ্দিন।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *