গুরুদাসপুরে মতিন চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী

রাজশাহী
আল-আফতাব খান সুইট, নাটোরঃ নাটোরের গুরুদাসপুরে ত্রাণ বিতরণকে কেন্দ্র করে গুলি ছুঁড়ে ত্রাস সৃষ্টি করে যুবলীগ নেতার বাড়িঘর ভাংচুর-লুটপাটের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের নাম অন্তর্ভুক্ত, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মামলার অন্য আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করেছেন ওই ইউনিয়নের ঝাউপাড়া- বিন্নাবাড়ি গ্রামের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। বুধবার (৩জুন) সকালে ঝাউপাড়া বাজারে ওই মানববন্ধন কর্মসুচীর পালন করা হয়।
এসময় স্থানীয় এলাকার পুরুষদের পাশপাশি নারীরাও অংশগ্রহণ করে মানববন্ধনে সমর্থন জানান।
ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ির মালিক বীজ ব্যবসায়ী ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা ফজলু সরদারের বাবা এবং মামলার বাদী ইসমাইল সরদারে  সভাপতিত্বে উক্ত কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য (২নং ওয়ার্ড) আবু সাইদ, ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মানিক মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ ও সভাপতি মাহাতব উদ্দিন প্রমুখ।
ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে ফজলু সরদার একজন ব্যবসায়ী। ঈদের দিন নিজস্ব তহবিল থেকে ৩’শ গরিব মানুষকে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুল মতিন তাঁর সমর্থকদের নিয়ে তার ছেলের ওপর চড়াও হন পর দিন মঙ্গলবার (২৬ মে)। সেসময় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতেই তাঁর সমর্থকরা ৬-৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তার বাড়িঘর ভাংচুর করে লুটপাট চালায়।
এ নিয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনকে প্রধান করে ২৫জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৭০-৮০জনকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু থানা পুলিশ চেয়ারম্যান মতিনের নাম বাদ দিয়ে তাঁর ছেলেকে প্রধান আসামী করে মামলা রেকর্ড করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদেই এলাকার মানুষকে নিয়ে মানবন্ধন কর্মসূচীর মাধ্যমে প্রতিবাদ করা হচ্ছে।
বীজ ব্যবসায়ী ও ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলুর সরদার অভিযোগ করেন, ঘটনার পর থানা পুলিশ চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে দেয়। কিন্তু ওই দিন রাতেই ছাড়া পান চেয়ারম্যান। সর্বশেষ মামলা থেকেও বাদ দেওয়া হয় চেয়ারম্যান মতিনের নাম। চেয়ারম্যান মামলায় আসামী না থাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ আসামী গ্রেপ্তারে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা।
ইউপি সদস্য আবু সাইদ অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের ভয়ে ইউনিয়ন পরিষদে যেতে পারছেন না তিনি। মিথ্যা মামলায় হয়রানী করা হচ্ছে তাঁকে। চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটলেও অস্ত্র উদ্ধার ও চেয়ারম্যানকে মামলায় আসামী করছেনা পুলিশ। এ কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানের নাম অর্ন্তভূক্তকরে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে এলাকার মানুষ।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন দাবী করেন, যুবলীগ নেতা ফজলু সরদারের রোষানল থেকে উদ্ধার করতে তাঁর সমর্থকরা ঝাউপাড়া গ্রামে গিয়েছিলেন। বিক্ষিপ্ত সমর্থকরা তাদের বাড়ি তছনছ করলেও গুলি ছুড়া বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম বলেন, জনপ্রতিনিধি হওয়ায় চেয়ারম্যানের নাম মামলায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়নি। গেল এক সপ্তাহে ১০জন আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। কৌশলগত কারণে অস্ত্র উদ্ধারে ধীরগতি অনুসরণ করা হচ্ছে।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *