আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী চীনের আধিপত্য বেড়েই চলছে। অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রযুক্তি; সব দিকে থেকে শক্তিশালী হচ্ছে এশিয়ার এই ‘কথিত’ সমাজতান্ত্রিক দেশ। কারণ করোনাকালে বিশ্বের একমাত্র দেশ হিসেবে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে চীন।
আবার বৃহস্পতিবার চীনের দক্ষিণনাঞ্চলের হাইনান দ্বীপ থেকে তিয়ানওয়েন-১ নামের একটি মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ করে দেশটি। উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রেকে টেক্কা দিয়ে মঙ্গলে অভিযান পরিচালনা করা। তাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্রমেই হুমকি হয়ে ওঠছে দেশটি। এমন অবস্থায় চীনকে মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ সংলাপ চান মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব পম্পেও। এনিয়ে স¤প্রতি জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাসের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল আর পম্পেও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাসের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের জার্মানির অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য কথা বলেছেন। করোনা পরবর্তী সময়ে কিভাবে অর্থনীতিকে আবার আগের জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়; সে বিষয়েও জার্মান মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন পম্পেও।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, অর্থনৈতিক দিক থেকে চীনকে মোকাবেলা করার জন্যও জার্মান মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন পম্পেও। সেই সঙ্গে লিবিয়ায় রাজনৈতিক সংলাপে অগ্রগতির ও সহিংসতায় স্থায়ী সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। ট্রান্স-অ্যাটল্যান্টিক সম্পর্কের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রæতি এবং বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন পম্পেও।
স¤প্রতি পম্পেও এ বিষয়ে একটি টুইট করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, জার্মান মার্শাল তহবিলের ব্রাসেলস ফোরামের আলোচনা উপভোগ করেছি। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি আমাদের মূল্যবোধ ও জীবনযাপন নিয়ে যে হুমকির সৃষ্টি করেছে তা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে।
এদিকে, স¤প্রতি চীনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তাদের সম্পর্কের অবন্নতি হচ্ছে। বাণিজ্যযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে করোনা নিয়ে সবচেয়ে বেশি বাকযুদ্ধ শুরু হয়ে দু’দেশের মধ্যে। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুরু করে চীনা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ। চীনও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকি দেয়।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, আমরা চীনা কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের ভুল পদক্ষেপ চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে মারাত্মক হস্তক্ষেপ করার মতো। সেই সঙ্গে এই ধরনের সিদ্ধান্ত চীন-মার্কিন সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকারকও। চীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন ব্যক্তি ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার।
এর আগে জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কিছু সিনিয়র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল মার্কিন প্রশাসন। এরপর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, মানবাধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘনে জড়িত থাকার জন্য মার্কিন আইন অনুসারে তিনজন সিনিয়র কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য।
স্ব.বা/বা