জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে রাসিকের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টার: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকেলে নগর ভবনের সিটি হলরুমে সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।

প্রধান আলোচক ছিলেন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম। তিনি তাঁর আলোচনায় বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা মানে শুধু একজন ব্যক্তিকে হত্যা নয়, একটি রাষ্ট্রকেই হত্যা করার শামিল। বঙ্গবন্ধু এক আদর্শের নাম। যে আদর্শের মৃত্যু নেই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, দর্শন, চলার পথ ও স্বপ্নই হবে বাংলাদেশের চালিকাশক্তি। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ যেন অভিন্ন সত্তা। আজকের এই দিনে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার প্রায় সকল সদস্য মৃতৃবরণ করেন। আমি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম আরো বলেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা ও ৩রা নভেম্বর জেল হত্যা দিবস একই সূত্রে গাথা। দুটি আলাদা করে দেখার কিছু নাই। বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যে কারা ছিল তা জাতির সামনে তুলে ধরা দরকার। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর একজন খুঁনি ফাঁসি হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের সমর্থন ছিল বলে জবানবন্দিতে বলেছে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায়। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুকে প্রায় সপরিবারে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর বংশকে নির্বংশ করতে অন্তসঃত্ত¡া নারী, শিশুপুত্র রাসেলকেও হত্যা করা হয়। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে দেশের একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে ভেবেছিল, এদেশকে পুনরায় পাকিস্তান বানানো যাবে, দেশে জয় বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধু ¯েøাগান আর কখনো উচ্চারিত হবে না। স্বাধীনতা বিরোধীদের সেই ভ্রান্ত ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে।

মেয়র আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নিয়ে দল গঠন করেছিল জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করেছিল জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যে ছিলেন জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর এখনো ৫জন খুনি বিভিন্ন দেশে পলাতক আছে। তাদের দেশে এনে বিচার কার্যকর করাসহ বঙ্গবন্ধু হত্যা পেছনে আর যারা জড়িত ছিল, তাদের নাম প্রকাশ হওয়া দরকার। তাদের মধ্যেই কেউ মারা গেলেও তাদের নাম সামনে আনা হোক; যাতে আমরা সবাই জানতে পারে তারা কারা ছিল।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড এবং জাতীয় শোক দিবস কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও তদারকি কমিটির আহŸায়ক কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন।

উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র-২ ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলী, ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. কামরুজ্জামান, ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসএম মাহবুবুল হক পাভেল, ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আব্দুল মমিন, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার, ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল আহম্মেদ, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমনসহ মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ। এ সময় সচিব আবু হায়াত মো. রহমতুল্লাহ, প্রধান প্রকৌশলী খন্দকার খায়রুল বাশার, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ঈ সাঈদ, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুনসহ রাসিকের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। দোয়া পরিচালনা করে সোনাদিঘি জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা ক্বারী মামুনুর রশিদ।

আলোচনা সভা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদদের আতœার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *