ফের বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক জাতীয় লীড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নতুন করে মিয়ানমারের সেনাদের জড়ো করায় বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের মতো মিয়ানমার সরকার সীমান্তে ব্যাপক সেনা মোতায়েন করে সে দেশের রোহিঙ্গাদের আবারও বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে কি না, এ নিয়ে স্থানীয়রা উৎকণ্ঠায় রয়েছে।

সীমান্তের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছু মিয়ানমার নাগরিককে ঘুনধুম সীমান্তের ওপারে জড়ো করা হয়েছে। তাদের যেকোনো সময় বাংলাদেশে ঠেলে দিতে পারে—এমন আশঙ্কা সীমান্তবাসীদের।

বিজিবি কর্তৃপক্ষ বলছে, মিয়ানমার সরকারের বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর আকস্মিক সেনা মোতায়েন করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ কারণে বাংলাদেশের ঘুনধুম ও তুমব্রæ সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। বিজিবি সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে থাকা তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানায়, মিয়ানমার সরকার রাখাইনের বিভাগীয় শহর আকিয়াব ও রাজধানী ইয়াঙ্গুন থেকে সেনাদের উত্তর-পশ্চিম আরাকানে মোতায়েনের জন্য নিয়ে আসছে। এই সেনাদের রাখাইনের (আরকান) মংডুর বলিবাজার, সাহেববাজার, ফকিরাবাজার, তুমব্রæ ও ঢেকিবনিয়া সীমান্তে জড়ো করা হয়েছে। এই সেনাদের আনা হচ্ছে স্থলপথ ও নাফ নদের নৌপথে। হঠাৎ মিয়ানমারের সেনাদের সীমান্তে জড়ো করায় বাংলাদেশ সীমান্তেও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুনধুম ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানায়, তারা তুমব্রæ ও মিয়ানমারের ঢেকিবনিয়া সীমান্তে অনেক মিয়ানমার নাগরিককে জড়ো করার খবর পেয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইনের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) পক্ষ থেকে মিয়ানমারের সীমান্তে সেনা সমাবেশের সত্যতা নিশ্চিত করা হলেও সেখানে মিয়ানমার নাগরিকদের জড়ো করার বিষয়টি তারা নিশ্চিত হতে পারেনি।

কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারের ওপারে সেনা সমাবেশের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। আমি নিজেও সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। সীমান্তে বিজিবির টহল আরো জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।’ টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান বলেন, নাফ নদের সীমান্তে বিজিবির সতর্ক নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুনধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ঘুনধুমের ওপারে মিয়ানমারের ঢেকিবনিয়া এলাকায় বেশ কিছু মিয়ানমার নাগরিককে জড়ো করার খবর পেয়েছি। রোহিঙ্গা ছাড়াও তাদের মধ্যে বেশ কিছু উপজাতি লোকজনও রয়েছে বলে জানা গেছে। যেকোনো সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দিতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, সোমবার ঘুনধুম বিজিবি ক্যাম্পে জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডাকা হয়েছিল। বিজিবির পক্ষ থেকে সীমান্ত পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।

স্ব.বা/বা

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *