স্বদেশ বাণী ডেস্ক: পদ্মা সেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে বাকি রয়েছে মাত্র তিনটি। এই ৩টি স্প্যানের মধ্যে আজ শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সেতুর মাওয়া প্রান্তে বসানো হবে ৩৯তম স্প্যান। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া অংশে ১০ ও ১১ পিলারের উপর বসানো হবে স্প্যানটি। আর এটি বসানো হলে দৃশ্যমান হবে সেতুর ৫ হাজার ৮৫০ মিটার। ৩৮তম স্প্যান বসানোর ৬ দিনের মাথায় ৩৯তম এই স্প্যানটি বসতে যাচ্ছে।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুর কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে ও কারিগরি জটিলতা না থাকলে স্প্যানটি শুক্রবার বাসানো হবে। আর চলতি নভেম্বরে এনিয়ে সেতুতে মোট ৪টি স্প্যান বাসানোর কাজ সম্ভব হবে।
এদিকে মাওয়া প্রান্তে স্প্যান ক্রেনে তোলা ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম চলছে। শুক্রবার সকালে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেন তিয়াইন-ই ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি নিয়ে নির্ধারিত পিলারের উদ্দেশে রওনা হবে।
কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে নির্ধারিত পিলার দুটির দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। ভাসমান ক্রেন এ দূরত্ব পারি দেওয়ার পর পরবর্তী প্রক্রিয়ায় কারিগরি সমস্যা না দেখা দিলা আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আজই স্প্যানটি বসানো সম্ভব হবে। তবে বৈরি আবহাওয়া কিংবা জটিলতা তৈরি হলে স্প্যানটি বসতে কিছুটা সময় লাগবে।
প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, ৩৯তম স্প্যানটি বসে গেলে বাকি থাকবে ২টি স্প্যান। ডিসেম্বর মাসে ১১ ও ১২নং পিলারের ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তাছাড়া স্প্যান বাসানো ছাড়াও অন্যান্য কাজও এগিয়ে চলছে। এরমধ্যে সেতুতে ১ হাজার ৮৪৮টি রেলওয়ে ও ১ হাজার ২৩৮টি রোড ওয়েস্ল্যাব বসানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৮টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৫ হাজার ৭০০ মিটার অংশ। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী-শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।