স্মৃতির মিনারে শ্রদ্ধার অর্ঘ্য

জাতীয়

স্বদেশবাণী ডেস্ক: মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে পৃথিবীতে অনন্য নজীর সৃষ্টি করেছে বাঙালি। সেই ভাষা বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে জাতি।  অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে আজও শহীদ মিনার ভরে গেছে ফুলে ফুলে।  যেমনটি ভরেছিল গেল ৬৮ বছর৷

করোনা মহামারী উপেক্ষা করে ফুল হাতে শহীদ মিনারে ছুটে চলছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজারও মানুষ। ফুলেল শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বাংলা মায়ের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

তবে করোনা মহামারির কারণে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের আয়োজনটি এবার হচ্ছে সীমিত পরিসরে। রোববার রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাদের প্রতিনিধিদল, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থার ব্যক্তিবর্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ শেষে সাধারণ মানুষের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ খুলে দেওয়া হয়।  এরপর সর্বস্তরের জনতা শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফিরে যাচ্ছেন আপন গন্তব্যে। ভোরে ঢাকার শাহবাগসহ বেশ কয়েকটি স্থানে প্রভাতফেরী হয়েছে। এতে শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সীরা অংশ নিয়েছেন।

মহামারি কালেও মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য আত্মত্যাগকারীদের প্রতি ভালোবাসার কমতি ছিল না সাধারণ জনগণের৷ লাল-সাদা-হলুদ-বেগুনি কত বাহারি রঙের থোকা থোকা ফুলের স্তবকে ছেয়ে গেছে শহীদ মিনার৷

হাতে ফাগুনে ফোটা রঙিন ফুলের স্তবক আর কণ্ঠে বিষাদমাখা চিরচেনা গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…’ নিয়ে ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়া সূর্যসন্তানদের স্মরণ করছে কৃতজ্ঞ জাতি৷

মায়ের ভাষার মান রাখতে সেদিন যারা রাজপথে ছিলেন সালাম, বরকত, রফিক, শফিক, জব্বার, তাদের অনেকে জীবনের চিরন্তন পরিণতি মেনে চিরবিদায় নিয়ে চলে গেছেন। অন্যরা বয়সের ভারে নুব্জ্য। কিন্তু তাদের সেই আত্মত্যাগ, সেই বীরত্বের কথা ভুলেনি কৃতজ্ঞ নতুন প্রজন্ম৷

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরেজমিনে দেখা যায়, ঘড়ির কাটায় সকাল সাতটা। সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে শহীদ মিনারের দিকে আসছেন। কেউবা ফুলের তোড়া, কেউবা একটি ফুল, আবার কারো হাতে একটি পতাকা শোভা পাচ্ছে। তবে  সবার মুখেই ধ্বনিত হচ্ছিল একুশের সেই গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশাপাশি সারাদেশের স্মৃতির মিনারগুলোও আজ ফুলে ফুলে ভরে গেছে।  নানা বয়সীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ফুল দিয়ে স্মরণ করছেন।

তবে এবারের শহীদ মিনারে আগত ব্যক্তিদের মানতে হচ্ছে বিশেষ সতর্কতা।  মাস্ক পরা এবং নির্দিষ্ট রুটম্যাপ অনুসরণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন তারা। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঁচ এবং ব্যক্তি পর্যায়ে দুজন করে শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার নির্দেশনা কর্তৃপক্ষের।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *