স্বদেশবাণী ডেস্ক: নার্সিং পেশার উন্নয়ন, অনিয়ম-দুর্নীতি ও বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়ে স্বল্পসময়েই নার্সদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল হাই।গত মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলি করা হয়েছে। তবে এই আদেশ বাতিল করে স্বপদে এই কর্মকর্তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ নার্সরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলোতেও আব্দুল হাইয়ের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মুখর হয়ে উঠেছে। অনেকেই তাকে আবার স্বপদে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
নার্স সংগঠনের নেতারা বলছেন, সৎ, দক্ষ ও চৌকস এই কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে বাংলাদেশের নার্সিং শিক্ষা ও সেবার ব্যাপক ক্ষতি হবে।
মোহাম্মদ আব্দুল হাইয়ের বদলি বাতিলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবেদন জানিয়েছে নার্সদের পেশাজীবী সংগঠন নার্সিং সোসাইটি অফ বাংলাদেশ।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মোরশেদ স্বাক্ষরিত এক আবেদনে বলা হয়েছে, করোনাকালীন এই মহামারি চলমান থাকা অবস্থায় নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতর থেকে একজন অভিজ্ঞ, মেধাবী, দক্ষ, সৎ ও চৌকস কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে বাংলাদেশের নার্সিং শিক্ষা ও সেবার ব্যাপক ক্ষতি হবে।
এতে বলা হয়, আব্দুল হাই নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক হিসেবে যােগদান করার পর সব দুর্নীতি, অনিয়ম ও বদলি বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে। রোগীর সেবায় নার্সরা অধিক আন্তরিক হয়েছেন।
তিনি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে যোগদান করার পর সাধারণ নার্সরা খুঁজে পেয়েছিল আস্থা ও কর্মচাঞ্চল্যতা। এমতাবস্থায় তার এই ধরনের বদলি কোনাভাবেই কাম্য নয়।
এতে আরও বলা হয়, বর্তমান সময়ে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের জন্য আব্দুল হাইয়ের মতো একজন সৎ, ধার্মিক, অমায়িক, নিরঅহংকার, ধৈর্যশীল, উদার, জ্ঞানী ও পরোপকারী কর্মকর্তা একান্ত প্রয়োজন।
আবেদনটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পেশাজীবী নার্সদের সংগঠন, বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সভাপতি মোহাম্মদ কামাল হোসেন পাটওয়ারী বলেন, আবদুল হাই, পিএএ একজন চৌকস এবং দক্ষ প্রশাসক। সাধারণ নার্সদের সমস্যা, সুবিধা, অসুবিধায় খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সাধারণ নার্সদের আস্থার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছিলেন খুব অল্প সময়েই। ডিজিটাল বাংলাদেশের একজন সত্যিকারের ডিজিটাল পরিচালক ছিলেন আব্দুল হাই, সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ছিলেন সরব। ফেসবুকে অনেক সমস্যা নিজের চোখে পড়ায় স্ব-প্রণোদিত হয়ে সমাধান করেছেন, এমন উদাহরণ ভুরিভুরি। একজন সত্যিকারের অভিভাবক বলতে যা বুঝায়, আবদুল হাই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে উঠেছেন। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের অসম্পূর্ণ কাজগুলো তার উদ্যোগ ও উদ্যমে পেয়েছে নতুন মাত্রা।
স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ (স্বানাপ) এর মহাসচিব মো. ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, পরিচালক আব্দুল হাই নার্সদের উন্নয়নে ব্যাপক পরিশ্রম করেছেন এবং এখনও করছেন। সাধারণ নার্স ও নার্সদের পেশাজীবী সংগঠনগুলোর এই সম্মিলিত দাবিটি আন্তরিকতা ও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।