রাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৫

রাজশাহী লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েকদিন ধরে চলা অস্থিরতার মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করলে রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ও কর্মচারীরা তাদের ধাওয়া দিলে পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।

এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় দুই কর্মকর্তাসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভিসির বিদায় বেলায় বাণিজ্যের মাধ্যমে চাকরি নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এমন খবরে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেলা ১২টার দিকে চাকরি প্রত্যাশী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়।

এসময় মহানগর ছাত্রলীগ সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সেকশক অফিসার মাসুদের উপরও হামলা চালায়। পরে রাবি ছাত্রলীগ এগিয়ে এলে তাদের উপরও হামলা চালায়। এসময় রাবি ছাত্রলীগ সংগঠিত হয়ে ধাওয়া করলে মহানগর ছাত্রলীগেরর সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে মহানগর ছাত্রলীগ পালিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাবি ভিসি আব্দুস সোবহানের মেয়াদের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। তিনি চাকরি প্রত্যাশী ১২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়লে মহানগর ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে হামলা করে। এ ঘটনার পরে রাবি ছাত্রলীগ ও কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তারা ভিসি ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুলতানুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি উপাচার্য অবৈধভাবে ১২২ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। এতে মতনৈক্য হওয়ায় উভয় পক্ষের সংঘর্ষ হয়।’

নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা থাকা অবৈধ নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও বিষয়ের সাথে আমার সম্পর্ক নেই। নিয়োগ হয়েছে কি না সেটাও আমার জানা নেই।’

এদিকে, দুপুর আড়াই টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান। শেষ মুহুর্তে কোন নিয়োগ দেয়া হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরে জানতে পারবেন বলেন উপচার্য। এখন থেকে বিহাসে নিজ বাড়িতে বসবাস করবেন বলে জানিয়ে সব প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান উপচার্য।

তবে উপচার্য তার শেষ কর্মদিবসে ৮৫ জনকে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, উপাচার্য এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বছর ডিসেম্বরে শিক্ষামন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরণের নিয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। আজ বৃহস্পতিবার উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হবে।

গত কয়েকদিন ধরে অবৈধ নিয়োগের আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষকসহ চাকরি প্রার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা লাগাতার আন্দোলন করে আসছিল। গত ৪ মে উপাচার্যের শেষ সিন্ডিকেট মিটিংকে কেন্দ্র করে শিক্ষকরা স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কাছে লাঞ্ছিত হন। এসময় এক ছাত্রলীগ কর্মী শিক্ষকদের প্রকাশ্যে গুলি করে মারার হুমকি দেয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *