রবীন্দ্রচেতনার আলোকে শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ রবীন্দ্রচেতনার আলোকে সাম্য ও শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরো দৃঢ় করার প্রয়াস চালানোর আহবান জানিয়েছেন। আগামীকাল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ এক বাণীতে তিনি এ আহবান জানান।

রাষ্ট্রপতি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬০তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর অমর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির চেতনা ও মননের প্রধান প্রতিভূ। বাংলা সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় রয়েছে তাঁর অবাধ বিচরণ। তিনি আমাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংগীতস্রষ্টা, চিত্রকর, সমাজচিন্তক এবং দার্শনিক হিসেবেও বিখ্যাত। সর্বোপরি, বাঙালি জাতীয়তাবোধের প্রধান রূপকারও তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, রবীন্দ্রনাথ বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসেন ১৯১৩ সালে, গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জনের মধ্য দিয়ে। তিনিই প্রথম অ-ইউরোপীয় হিসাবে বিশ্বসাহিত্যের এই সর্বোচ্চ স্বীকৃতি অর্জন করেন। তিনি ভারতীয় সংস্কৃতির বহুত্ববাদ, বৌদ্ধ ধর্মের অহিংস ও ইসলাম ধর্মের সুফিবাদ এবং বাংলার বাউলদের ভাববাদী চেতনার সমন্বয় সাধন করে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেন।

তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ মানবতাবাদী অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি। পূর্ববঙ্গ তাঁর শিল্পীসত্তা, মানবসত্তা এবং ঐক্য ও সম্প্রীতির আভায় সমুজ্জ্বল। ফলে সাধারণ বাঙালির দুঃখ-বেদনার কথক হিসেবে যে রবীন্দ্রনাথকে পেয়েছে, তা পূর্ববঙ্গেরই সৃষ্টি। এসবের পাশাপাশি মানুষের প্রত্যক্ষ কল্যাণ কামনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিক্ষার বিভিন্ন পর্যায় নিয়ে ভেবেছেন। শিশুসহ নতুন প্রজন্মকে সুশিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন শান্তিনিকেতন। সেই সঙ্গে তিনি পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাকেও সমান গুরুত্ব দিয়েছেন। মানবতাবাদী কবি রবীন্দ্রনাথ শিক্ষার ক্ষেত্রে চিরকাল বিশ্বের জানালাকে খুলে দেয়ার কথা বলেছেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, রবীন্দ্রনাথের বিশালতা এবং তাঁর সৃষ্টির অপূর্ব মাধুর্যকে অন্তরাত্মা দিয়ে উপলব্ধি করতে হলে রবীন্দ্রচর্চার বিকল্প নেই। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জগৎ-সংসারকে গভীরভাবে জানতে তরুণ প্রজন্ম রবীন্দ্রসাহিত্যে অবগাহন করবে, রবীন্দ্রচর্চায় থাকবে ব্যাপৃত- যা কেবল আচারসর্বস্ব নয়, জীবনসর্বস্ব।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *