স্বদেশবাণী ডেস্ক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বজুড়ে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। শান্তি প্রতিষ্ঠাই ছিলো তাঁর রাজনৈতিক দর্শন। ১৯৭৩ সালের এই দিনে শাষিত, নিপীড়িত জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম আর বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন বঙ্গবন্ধু। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা পরিণত হন বিশ্ববন্ধুতে।
ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর পাকিস্তানি শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দীর্ঘ সংগ্রামের পর পরাধীন বাঙালিকে এনে দেন স্বাধীনতার স্বাদ।
১৯৭১ সালে ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু। বিশ্বকে দেন শান্তির বার্তা। কারো সাথে শত্রুতা নয়, সবার সাথে বন্ধুত্ব- এই ছিলো জাতির পিতার পররাষ্ট্র নীতি।
শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের স্বীকৃতি দিয়েছিল বিশ্বশান্তি পরিষদ। ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর ফিনল্যান্ডের হেলসিংকিতে এক ইশতেহারে পরিষদের সর্বোচ্চ সম্মান জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত হন বঙ্গবন্ধু।
বিশ্বসভায় বঙ্গবন্ধুর নামই স্পষ্ট করে বাংলাদেশের অবস্থান। রাষ্ট্রনায়কদের কাতারে জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত বঙ্গবন্ধু প্রতিনিধিত্ব করেন শত সংগ্রামে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে বিশ্ব বিস্তৃত মানুষগুলোর কাতারে অন্তর্ভুক্ত করা হলো এই পদকের মাধ্যমে। এটি বঙ্গবন্ধুর অর্জন, আমাদের অর্জন। আমি মনে করি, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনার বাইরে এখনও যেতে পারেনি।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশীয় শান্তি সম্মেলনে জাতির পিতাকে পদক তুলে দেন বিশ্বশান্তি পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল। বিশ্ববন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের এই সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় উচ্চারণ- বিশ্বশান্তি তাঁর জীবনদর্শনের মূলনীতি।
শাসক এবং শোষিতের দুনিয়ায় বঙ্গবন্ধু অবস্থান নেন শোষিতের পক্ষে।
অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা শোষণ মুক্তির মধ্যে শান্তির সন্ধান করেছিলেন এবং সেটা যে করেছিলেন তার প্রমাণটা হচ্ছে ১৯৭৩ সালের ৫ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর আলজেরিয়ায় জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন বিশ্ব আজ দু’ভাগে বিভক্ত। শোষক আর শোষিত, আমি শোষিতের পক্ষে।
বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক বাংলাদেশকেই মহিমান্বিত করে বিশ্বসভায়।