হাসপাতালে ‘অক্সিজেনের অভাবে’ ৭ রোগীর মৃত্যু

রাজশাহী

স্বদেশবাণী ডেস্ক: বগুড়ায় করোনা বিশেষায়িত মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ‘হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার অভাবে’ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গত ১৩ ঘণ্টায় শ্বাসকষ্টে ৭ রোগী মারা গেছেন। এখানে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া আরও ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মৃতরা হলেন- বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জপাড়ার আলী জাহিদ (৬৫), শিবগঞ্জ উপজেলার মীরা বেগম (৩৫) ও আবদুল হান্নান (৬৫), সারিয়াকান্দির টুকু মন্ডল (৬৫), জয়পুরহাটের পাঁচবিবির রাবেয়া বেগম (৬০), নওগাঁর বদলগাছির আবদুল মতিন চৌধুরী (৮২) ও সিরাজগঞ্জ সদরের লিলি চৌধুরী (৫৫)।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ইউনিটে মাত্র দুটি ক্যানোলা থাকলেও একটি অকেজো। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নুরুজ্জামান সঞ্চয় জানান, কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ইউনিটে মূল্যবান ‘হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা’র সঙ্কট থাকলেও কেউ এর অভাবে মারা যাননি। মৃতরা সবাই বয়োবৃদ্ধ, ডায়াবেটিসসহ জটিল রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া তাদের সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

২৫০ শয্যার বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের সূত্রে জানা গেছে, করোনা বিশেষায়িত এ হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতা ২০০ রোগী। শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২২৩ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত মার্চে এখানে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ইউনিটের কার্যক্রম শুরু হয়। মুমূর্ষু রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে অন্তত ২০টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার প্রয়োজন থাকলেও আছে মাত্র দুটি। তার মধ্যে একটি অকেজো। তবে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ১০টি এবং বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে আছে ১০টি।

এদিকে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের চিকিৎসা দিতে কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছেন। ক্যানুলার সঙ্কট থাকায় মুমূর্ষু রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অক্সিজেনের অভাবে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত শ্বাসকষ্টে সাতজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগি মারা গেছেন। অক্সিজেন স্যাচুরেশন (রক্তে ঘনীভূত অক্সিজেনের মাত্রা) ৮৭-এর নিচে থাকা ১০ রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বরাদ্দ না পাওয়ায় ‘হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার’ সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে বগুড়া হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নুরুজ্জামান সঞ্চয় জানান, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা বরাদ্দ চেয়ে দফায় দফায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো বরাদ্দ মেলেনি।

বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. গউসুল আজিম চৌধুরী জানান, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে মোট ১১ জন মারা গেছেন। এ সময় আক্রান্ত হয়েছেন, ১শ’ জন। করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি জানান, ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্ট খুবই সংক্রমণশীল। এর কারণে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সিভিল সার্জন করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *