রাজশাহীর তানোরে ধান সংগ্রহে গিয়ে কৃষকের তোপের মুখে ইউএনও

রাজশাহী লীড

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন বানু একক ক্ষমতাবলে মাইকিং করে ধান সংগ্রহে গিয়ে কৃষকদের তোপের মুখে পড়ে দ্রুত শটকে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার দুপুরের আগে উপজেলার কামারগাঁ খাদ্যগুদামে ঘটে এমন ঘটনা। ফলে ধান সংগ্রহের জন্য মাত্র কয়েকশো কৃষি কার্ডসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিজ দপ্তরে আসেন ইউএনও । এঘটনায় কার্ড নিয়ে এসেও যারা ফেরত গেছে সেসব কৃষকদের মাঝে সৃষ্টি হয় চরম অসন্তোষের ।

জানা গেছে গত রোববার সরকারীভাবে ধান সংগ্রহের জন্য উপজেলার কামারগাঁ ইউপি জুড়ে মাইকিং করা হয়। সে অনুযায়ী গতকাল সোমবার সকাল থেকেই ইউপি এলাকার কৃষকরা কামারগাঁ বাজারে অবস্থিত খাদ্যগুদামে আসা শুরু করেন । এদিকে সকাল ১১টার পরে ইউএনও পুলিশ পিকআপ নিয়ে হাজির হন খাদ্যগুদামে । শুরু হয় কৃষি কার্ডসহ কাগজপত্র জমা নেবার কাজ। তিনশো কার্ড জমা হবার পর নেয়া বন্ধ করে দিলে যারা দিতে পারেনি তাঁরা ব্যাপক উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ইউএনওর সাথে ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কার তিনি মাইকে সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান । কোন ভাবেই কৃষকরা থামছিলনা । এসময় ইউএনও নাসরিন বানু নিজে মাইক নিয়ে কৃষকদের বলেন যারা আগে কার্ড দিয়েছেন তাদের ধান আগে নেয়া হবে। এখানে অনেক কৃষক আছেন কিন্তু আমাদের বরাদ্দ খুবই কম । আমি ৩০০টির মত কার্ড নিয়ে যাচ্ছি এর মধ্যে যাচাই বাঁচাই করে সম অধিকার অনুযায়ী বণ্টন করা হবে বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ।কার্ডধারী কৃষক কামারগাঁ ইউপি এলাকার বারোঘরিয়াগ্রামের রহমতুল্লা জানান সময় মত এসেও আমার কার্ড নেয়নি। আর নাকি কার্ড নেয়া যাবেনা। যদি নাই নেয়া যাবে তাহলে পুরো ইউপি এলাকায় মাইকিং করে কৃষকদের কেন ডাকা হল। একই ধরনের অভিযোগ করেন কামারগাঁ বাজার এলাকার কৃষক মিল্টন, নিলিমা, চন্দন,শুসিল দাসসহ শতশত কৃষক । তাদের একটাই কথা সব কৃষককে মাইকিং করে কেন ডাকা হল। আর এখন বলছে বরাদ্দ কম ।

এদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন জানিনা নির্বাহী অফিসার কাউকে কোন কিছু না জানিয়ে এমন কাজ করল কি জন্য । তিনি আরো জানান গত ১ তারিখে সিদ্ধান্ত হয় খাদ্য গুদামে এসে কৃষকরা ধান দিবেন। কারন চাহিদার তুলনাই বরাদ্দ অনেক কম । দুই গুদাম মিলে ৬১৫মেঃ টন ধান বরাদ্দ এসেছে। উপজেলা কৃষকদের চাহিদার তুলনাই এটা কিছুই না। এমনকি ২তারিখের সভাইও এমনই কথা হয়। আমি বলেছিলাম যে সব কৃষকগুদামে আগে আসবে তাঁরা অন্তত ১টন করে হলেও যেন ধান দিতে পারেন । নির্বাহী অফিসার আমাদেরকে না জানিয়ে মাইকিং করে তিনি গুদামেই স্লিপ দিয়ে ধান সংগ্রহ করবেন । তিনি কামারগাঁ গেলেন ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কারকে নিয়ে ।অথচ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া সরদারের বাড়ি ওখানেই তিনিও জানেন না কিছুই।আমিতো জানিই না । তিনি কি ভেবে একাজ করলেন জানিনা এখন ফোনের পর ফোন আসতে শুরু করেছে । মাত্র ১১৬টন ধানের জন্য পুরো ইউপি এলাকায় করেছেন মাইকিং। এক টন করে যদি কৃষকরা ধান দিতে পারত তাহলেও অন্তত ১১৬জন কৃষক সুবিধা পেতেন ।

কামারগাঁ খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ওসিএলএসডি মাইনুল ইসলামের কাছে বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান নির্বাহী স্যার যে মোতাবেক স্লিপ দিবেন সে মোতাবেক ধান সংগ্রহ করা হবে ।#

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *