রোহিঙ্গা সংকটের বোঝা ও দায়িত্ব ভাগ করে নেয়ার আহ্বান

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক: জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা রোহিঙ্গা সংকটের বোঝা ও দায়িত্ব ভাগ করে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রচেষ্টা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বিশেষ অর্থনৈতিক সহায়তাসহ জাতিসংঘের মানবিক ও দুর্যোগ-ত্রাণ সহায়তার সমন্বয় জোরদার করা শীর্ষক সাধারণ বিতর্কে  অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের যে মানবিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে তা তুলে ধরেন তিনি।

রাবাব ফাতিমা মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ বাড়ানোর অনুরোধ জানান, যাতে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গাদের নিজভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়। রোহিঙ্গা সঙ্কটের ফলে এই অঞ্চলে ইতোমধ্যে যে জটিল রাজনৈতিক ও মানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, সংকট দীর্ঘায়িত হলে তা আরও জটিলতর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত মানবিক পরিস্থিতিতে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, প্রতিরোধ, অভিযোজন, প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জন, এাণ ও প্রশমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে উত্তম অনুশীলন এবং বিশেষ বিনিয়োগ করে যাচ্ছে তা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, “আমরা ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছি যা আমাদেরকে জলবায়ু নাজুক পরিস্থিতি থেকে জলবায়ুর প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জন ও সমৃদ্ধিপূর্ণ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত করতে সাহায্য করছে।”

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরির্বতনের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার ক্রমবর্ধমান ঘটনা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, জলবায়ু পরির্বতনের ফলে বাস্তুচ্যুতদের মানবিক চাহিদা মেটাতে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ ও অন্যান্য অংশীজনদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় বৃদ্ধি করা অত্যন্ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে তিনি প্লাটফর্ম অন ডিজাসটার ডিসপ্লেসমেন্টের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন।

জলবায়ু পরির্বতনে জরুরি সাড়া দান পর্যায় থেকে প্রস্তুতি ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম পর্যায়ে উত্তরণের ক্ষেত্রে জাতীয় অগ্রাধিকার ও মাঠ পর্যায়ের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই মানবিক সহযোগিতার ওপর র্নিভরশীলতা হ্রাস ও প্রতিকূলতা মোকাবিলায় সক্ষম সমাজ বিনির্মাণের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। যে কোনো মানবিক সঙ্কটে নারীরাই প্রথম সাড়া দেয় এবং কেন্দ্রিয় ভূমিকা পালন করে।

তিনি দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও প্রশমণের ক্ষেত্রে লিঙ্গ-সংবেদনশীল নীতি জোরদার কারার আহ্বান জানান। সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে মানবিক সহযোগিতার প্রবেশাধিকার না দেওয়া এবং মানবাধিকার কর্মী ও মানবিক সাহায্যের স্থাপনা ও সরঞ্জামাদির উপর নির্বিচারে সশস্ত্র হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এধরণের সহিংসতার দায়বদ্ধতা নিরূপণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সাধারণ বিতর্কের পর সাধারণ পরিষদে জাতিসংঘের মানবিক ও দুর্যোগ-ত্রাণ সহযোগিতার সমন্বয় শক্তিশালীকরণ বিষয়ক চারটি রেজুলেশন গৃহীত হয়। এর মধ্যে ‘গ্রুপ-৭৭ ও চীন’র পক্ষে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিষয়ক রেজুলেশনটি গ্রহণের ক্ষেত্রে সমন্বয় করে বাংলাদেশ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *