নড়াইল জেলার উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করলেন: এমপি মাশরাফি

জাতীয়

নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নিজ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা।

আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান তিনি। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব ইমরুল কায়েস বলেন, নড়াইল-২ আসনের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন সংসদ সদস্য মাশরাফি।

তিনি আরো জানান, সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা নড়াইলের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এসেছিলেন। নড়াইলের মানুষ হিসেবে পুরোটা সময় আমরা একসঙ্গে ছিলাম। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, নড়াইল সদর হাসপাতালে চারমাসে সেবার মান বেড়েছে দ্বিগুণ, কমেনি দালালের দৌরাত্ব নড়াইল সদর হাসপাতালে সেবার মান এখন একটু বেড়েছে। কিন্তু দালালের দৌরাত্ব কমেনি।

নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার সরাসরি তত্বাবধায়নে এক’শ শয্যা বিশিষ্ট নড়াইল সদর হাসপাতাল এখন সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা পাওয়ার পরিবেশ গড়ে উঠেছে। পাল্টে গিয়েছে হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও রোগীদের খাবারের মানও। প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল ক্যাম্পাসে দেখা মেলে না। নেই কোন কোনপাট, যানজট শুণ্য। আগের মতো তেমন কোন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টিটিভদের দৌরাত্বও দেখা যায় না। দু:খের বিষয় হলেও সত্য, হাসপাতাল এখনও দালালের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত হতে পারেনি। সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত নড়াইল সদর হাসপাতাল সরেজমিনে পরিদর্শন ও চিকিৎসকদের সাথে মতবিনিময়কালে উপরোল্লেখিত তথ্য সমূহ জানাযায়।

উল্লেখ্য, এ বছরের ২৫ এপ্রিল নড়াইল সদর আধুনিক হাসপাতাল পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। ঔসময় তিনি বলেছিলেন হাসপাতালে কোন দালাল ডুকতে পারবে না, হসপিটাল ক্যাম্পাসে বহিরাগত কোন প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স অবস্থান করতে পারবে না। হাসপাতালে যতটুকু রিসোর্স রয়েছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

দুপুর আড়াইটার দিকে নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়কের অফিস কক্ষে কর্মরত সকল চিকিৎসকদের নিয়ে হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন তত্বাবধায়ক ডা. মো: আব্দুস শাকুর।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কনসালট্যান্ট ডা: অনিতা সাহা, জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা: মো: ইয়ানুর রহমান, জুনিয়র কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিষ্ট ডা: কাজী মো: রবিউল আলম, জুনয়ির কনসালট্যান্ট ডা. এম এম আব্দুর রশিদ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারী) ডা: মো: আহাদ আলী মহলদার, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (কার্ডিও) ডা. মো: মোশফেক-উর রহমান, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আ. ফ. ম মুশিউর রহমান বাবু, মেডিকেল অফিসার সুজল কুমার বকশী, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থো) ডা: আব্দুর রহমান, মেডিকেল অফিসার ডা. আলিমুজ্জামান সেতু, মেডিকেল অফিসার ডা: সুব্রত কুমার, মেডিকেল অফিসার ডা: রোকসানা বিনতে আকবর, ডেন্টাল সার্জন ডা: আফিকুর রহমান সৌরভ, প্যাথলজিষ্ট ডা: বিভাষ কুমার শর্মা, মেডিকেল অফিসার (ইউনানী) ডা: মো: শাহীন আলী, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা: মো: আকরাম হোসেন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (ইএনটি) ডা: মো: নূর কুতুবুল আলম, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনী) ডা: মৃদুলা কর, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেসথোসিয়া) ডা: এ এইচ এম শাহিনুর রহমান, মেডিকেল অফিসার ডা: এ এস এম সায়েম এ সময় তত্বাবধায়ক মো: আব্দুস শাকুর জানান, এক’শ বেডের হাসপাতালে আউটডোরে প্রতিদিন রোগী দেখা হচ্ছে দুই হাজারের উপরে এবং ভর্তি ছিলো ২৬৪ জন, ভর্তি রয়েছে ২৪৮ জন। কিন্তু এরমধ্যে সরকারিভাবে খাবার ব্যবস্থা আছে মাত্র ১০০ জন রোগীর। বাকি ভর্তি চিকিৎসাধীন রোগীর খাবার ব্যবস্থা হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের দেয়ার কোন সুগোগ নেই।

এছাড়া এক’শ বেডের এ হাসপাতালে জন্য যে সরকার ঔষধ বরাদ্দ দিয়েছে, তা দিয়ে সকল রোগীদের সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ঔষধ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা খুবই জরুরী। পাশাপাশি হাসপাতালে একটি আল্ট্রাসোনোগ্রাম মেশিন ছিলো তা বিগত ২,৩ মাস আগে থেকে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। মেরামতের জন্য কয়েকবার লেখালেখি হয়েছে, কিন্তু এখনো কোন ফলাফল হয়নি। দ্রুত হাসপাতালে একটি নতুন আল্ট্রোসোনোগ্রাম মেশিন প্রয়োজন। হাসপাতালের দালালের দৌরাত্ব ও প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মো: আব্দুস শাকুর বলেন, এ হাসপাতালে ২/৩ জন আউটসোসিং কর্মী স্থানীয় প্রভাবশালীদের অজুহাত দেখিয়ে রোগীদের বাইরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার অভিযোগ রয়েছে এবং তাদের আচারনও ভালো না এমনও অভিযোগ রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান, হাসপাতাল ক্যাম্পাসে বহিরাগত কয়েকজন দালালদের উৎপাতও রয়েছে। এসব ঠেকাতে স্থানীয় সচেতন মানুষ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডাদের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। হাসপাতালের সেবার মানন্নোয়নের লক্ষ্যে তিনি আরো জানান, মাঝে মধ্যে স্থানীয় সচেতন মানুষ হাসপাতাল পরিদর্শন করে আমাদের পরামর্শ দিলে আমরা যারা ডাক্তার রয়েছি তারা নিরাপদ অনুভব করি।

তিনি আরো জানান, হাসপাতালের সেবার মান বৃদ্ধি হওয়ায় ২,৩ মাস আগের তুলনায় বহি:বিভাগ ও ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার সরাসরি তদারকির ও পরামর্শের ফলে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। এ সময় হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আ. ফ. ম মুশিউর রহমান বাবু জানান, আমাদের নড়াইল-২ আসেনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার আন্তরিক তৎপরতায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান বেড়েছে।

চিকিৎসক সংকট অনেকাংশেই দুর হয়েছে। সেবা ভালো পাওয়ার কারনে ৩/৪ মাস আগের থেকে রোগী বর্তমান প্রায় দুইগুণ বেড়েছে। তিনি আরো জানান, হাসপাতালে অনেক মালামাল ব্যবহার অনুপোযোগি হয়ে পড়ে আছে। সেগুলি একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিলাম বা ধংস করে না ফেললে হাসপাতালের অনেক জায়গা দখল করে রেখেছে। যার ফলে হাসপাতালে ভেতরে ও বাইরে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে অসুবিধা হচ্ছে।

বিষয়টি এমপি মহোদয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এদিকে আউটডোরে চিকিসৎসা নিতে আসা রোগী লাইনে দাড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হিমসিম খাচ্ছে। এর ফাঁকে ডুকে পড়ছে দালাল চক্র। গ্রামগঞ্জ থেকে আসা সাধারণ রোগীরা ভদ্রবেসি দালাল চক্রে পড়ে চিকিৎসা সেবা থেকে কেউ কেউ বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার রোগীর প্রচন্ড ভিড়ে কেউ কেউ চিকিৎসকের দোহায় দিয়ে বকসিস হিসেবে ৩০-৫০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে রোগিদের অভিযোগ রয়েছে।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *