মোনাজাতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ‘জান্নাত কামনা’, পৌর আ. লীগ নেতা বহিষ্কৃত

রাজশাহী লীড

বাগমারা প্রতিনিধি: স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রথম প্রহরে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় করা মোনাজাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের জান্নাত কামনা করায় তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার মো. আব্দুর রাজ্জাককে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় এ ঘটনাটি ঘটেছে। প্রথমে আমি নিজেও বুঝতে পারিনি। দলের নেতা-কর্মীরা বিষয়টি লক্ষ করে আমাকে জানায়। গতকাল আমি তাকে প্রশ্ন করি। জবাবে তিনি বলেন, তার ডায়াবেটিস বেশি ছিল, তিনি অসুস্থ বোধ করছিলেন এবং তার চোখে ঘুম ছিল। কাজটি তিনি ইচ্ছা করে করেননি।

কিন্তু তার এই বক্তব্য আমাদের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। যে কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলা ও কেন্দ্রে জানানো হয়েছে তাকে যেন দল থেকে বের করে দেওয়া হয়, বলেন আবুল কালাম আজাদ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার বয়স ৬০ বছর। আমি ৪০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। আমার পরিবারের সবাই মুক্তিযোদ্ধা। জেএমবি এবং বিএনপি আমাকে নির্যাতন করেছে। আমার চাচাতো ভাই আলো খন্দকারকে চরমপন্থীরা (সর্বহারা) হত্যা করেছে। আমি ২০ বছর তাহেরপুরের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলাম। সম্প্রতি আমাকে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে। আমি কোনো মসজিদ-মাদ্রাসায় জড়িত না, কৃষি কাজ করি। তবে দলীয় অনুষ্ঠানে অনেক আগে থেকেই দোয়া পরিচালনা করি।

সেদিন আমি ৫ মিনিটের বক্তব্য দিয়েছিলাম। অনুষ্ঠান ছিল রাত ২টায়। আমি গ্রামের মানুষ, নামাজ পড়ে রাত ৮টা-৯টায় ঘুমিয়ে পড়ি। আমি খুব অসুস্থ আমার ব্লাড সুগার ২৭। দেশপ্রেম আর দলীয় কর্মসূচির কারণে অত রাতে শহীদ মিনারে গিয়েছিলাম। ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হওয়ায় আমাকে দোয়া পরিচালনা করতে দেওয়া হয়েছিল। ৫ মিনিটের বক্তব্যের কোনো জায়গায় আমার ভুল হয়নি। শুধু একটা ভুল হয়েছে, যেটা সজ্ঞানে করিনি। দল থেকে আমাকে বহিষ্কার করায় যে ব্যথা পেয়েছি, জেএমবি-বিএনপির নির্যাতনেও সে ব্যথা পাইনি, বলেন আব্দুর রাজ্জাক।

আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে কথা বলে পরে এই প্রতিবেদক আবারও আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন, আব্দুর রাজ্জাক আসলেই নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। তাকে অব্যাহত দিতে আমাদের খুবই কষ্ট হয়েছে। যেহেতু তিনি একটি কথা বলে ফেলেছেন এবং সেটা ভাইরাল হয়ে গেছে…এখন ভাইরালের যুগ চলছে। তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

 

স্ব:বা/না

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *