সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে দুলছে বাঘার কৃষকের রঙিন স্বপ্ন

রাজশাহী লীড

বাঘা প্রতিনিধি: সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে দুলছে বাঘার কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্তজোড়া মাঠ। অপরূপ সরিষার খেত! যতদূর চোখ যায় কেবল হলুদ আর হলুদ। বাঘার চরঅঞ্চলে মাঠজুড়ে হলুদের সমারোহ। উপজেলার মাঠের পর মাঠ চাষ হয়েছে সরিষা। এবার কৃষক ও সংশ্লিষ্ট অফিস বাম্পার ফলনের আশা করছেন। ঋতু পরিক্রমায় হেমন্ত ও শীত ঋতুতে মাঠে মাঠে সরিষার চাষ হয়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে ২ হাজার জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাঘার সরিষা চাষে দেশের চাহিদার বড় একটি অংশ হিসেবে চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি অধিদপ্তর।

বাঘা উপজেলার চর অঞ্চল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ সরিষা ফুলের অপূর্ব হলুদে ঢেউ । চোখ জুড়ানো দৃশ্য আর সরিষার ফুলে আকৃষ্ট হয়ে মধু আহরণে ব্যস্ত মৌমাছিরা। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা মাঠ। প্রকৃতির সৌন্দর্য্য যেমন বাড়িয়ে দিয়েছে তেমনি অর্থনৈতিক সচ্ছলতার হলুদ স্বপ্নে কৃষকরা।

কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমন ধান ওঠার পর ইরি বোরো ধান রোপণের আগে জমি অলস পড়ে থাকে। এ সময় সরিষা চাষ করা হয়। ফলে যেমন তেলের চাহিদা মিটিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়, অন্যদিকে জমিতে জৈব সারের ঘাটতি পূরণে বিরাট ভূমিকা রাখে। বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। বেশ ভালো ফুল ধরেছে। আসা করছি এবার বাম্পার ফলন হবে। তিনি বলেন, বীজ বোনার দুই মাসের মধ্যে সরিষার ফসল ঘরে তোলা যায় বলে অন্য আবাদের সমস্যা হয় না। সামান্য ইউরিয়া ছাড়া আর কোনো সারের প্রয়োজন হয় না সরিষায়। চারা গজানোর পর আগাছা পরিষ্কার করা ছাড়া তেমন কোনো শ্রমেরও দরকার হয় না। বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৬মণ সরিষার ফলন হয়। কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই দেড় থেকে দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করি। তবে এবার সরিষার দাম ভালো রয়েছে। প্রতি মণ সরিষা এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ থেকে ২৮০০ টাকায়। তবে সরিষার বাম্পার ফলন হলেও ভরা মৌসুমে ভালো দাম পাওয়া যায় না। কৃষক রুস্তম সরকার বলেন, এবার এক বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। সরিষায় ভালো ফুল ধরেছে। আশা করছি ভলো ফলনও হবে।

কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বাঘায় সরিষা চাষ বাড়ছে। উপজেলায় প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষা হয়েছে। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি চাষ হচ্ছে। পদ্মার চরাঞ্চলে। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার বেশি সরিষা চাষ হবে বলে আশা করছি। এছাড়া উচ্চ ফলনশীল সরিষা ও আবাদ ভালো হওয়ায় গত বছরের থেকে এবার ভাল ফলন হবে বলে জানান তিনি।##

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *