ছাত্রীকে শিক্ষকের কুপ্রস্তাব, ফেসবুকে অডিও রেকর্ড ভাইরাল

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: মুঠোফোনে ছাত্রীকে প্রায়ই কুরুচিপূর্ণ নানা ইঙ্গিত করতেন ৫০ বছর বয়সী শিক্ষক শাহিন উদ্দিন। টাকার লোভ দেখিয়ে দিতেন কুপ্রস্তাবও। ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাবের এমন একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয় ফেসবুকে। অশালীন ফোনালাপ ফাঁস হতেই ‘হার্ট অ্যাটাক’ করেন সেই শিক্ষক। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনাটি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের। শাহিন উদ্দিন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হাজী লাল মামুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক।

জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে হাজী লাল মামুদ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন শাহিন উদ্দিন। কিন্তু ১০ জানুয়ারি ফেসবুকে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর গোপন ফোনালাপ ভাইরাল হয়। এতে ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ নানা ইঙ্গিত করেন এবং টাকার প্রভোলন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। বিষয়গুলো মেয়েটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি বারবার তাকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন।

এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়ের মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এতে বক্তারা বলেন, হাজী লাল মামুদ উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহিন উদ্দিনের সঙ্গে এক শিক্ষার্থীর যৌন হয়রানিমূলক অডিও রেকর্ড ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ অপরাধে শিক্ষক শাহিন উদ্দিনকে বিদ্যালয় থেকে চিরতরে বরখাস্ত করাসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাই।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের গণিত বিষয় নিতেন শাহিন উদ্দিন। খুব ভালো বোঝাতেন। কিন্তু তিনি কেন এমন করলেন তা তাদের বুঝে আসছে না। একজন শিক্ষক হয়ে এত জঘন্যতম একটা অপরাধ তিনি কীভাবে করলেন। ভাইরাল হওয়া অডিওটি ভালো করে তদন্ত করে দোষীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

এক শিক্ষার্থী বলেন, বিদ্যালয়ের একজন গুণী শিক্ষক হয়ে তিনি যে কাÐ করেছেন সেটা খুব লজ্জাজনক। তবে আমার একটা দাবি সঠিক তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। তবে এটা নিয়ে যেন কেউ নোংরা রাজনীতি না করে সেই দিকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নজর রাখা জন্য দাবি জানাই।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. শাহিন উদ্দিনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

বিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক বলেন, ২৬ বছর ধরে বিদ্যালয়ে দুজন একসঙ্গে শিক্ষকতা করছি। কিন্তু তিনি কেন একজন মেয়ের বয়সী শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন করলেন বুজতে পারছি না। তবে এ ঘটনা ক্ষতিয়ে দেখার জন্য বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া সবার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিক্ষকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, কষ্ট করে আমাদের সংসার চলে। ভেবেছিলাম মেয়েটি পড়ালেখা করে একটা সরকারি চাকরি করলে হয়তো ভাগ্যের চাকা ঘুরবে। কিন্তু বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমার মেয়ের পুরো ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিলেন। মামলা করার মতো ক্ষমতাও আমাদের নেই। আমি ওই শিক্ষকের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার কথা শুনে হার্ট অ্যাটাক করেছেন ওই শিক্ষক। বর্তমানে তিনি সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে এবং তদন্তের মাধ্যমে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *