বিএমডিএর অযথায় পুকুর খননে কৃষকের ৩০বিঘা কৃষি জমি অনাবাদি

কৃষি রাজশাহী

তানোর প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর তানোরের সীমান্ত সংলগ্ন আলোকচ্ছত্র ধানী মাঠে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) কৃষকদের মতামত উপেক্ষা করে জোরপুর্বক পুকুর পুনঃখনন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার পুকুর খনন কারী ঠিকাদার রাজশাহী শহর সাগরপাড়া এলাকার গোলাপ জমিতে পানি না দিতে একাধারে হুমকি ধামকির ভয়ে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে পানি দিতে দিচ্ছেনা বলেও একাধিক কৃষকরা নিশ্চিত করেন। ফলে ৩০ বিঘা জমির মালিকরা বোরো রোপনের সময় চলে যাওয়ার কারনে এক প্রকার শঙ্কায় পড়েছেন কৃষকরা। কারন ধানী মাঠ হলেও আন্ধারইল বিল হিসেবেও পরিচিত। ফলে দেরিতে রোপন করলে উত্তোলনের সময় টানা বৃষ্টি হলে পানিতে ওই সব জমি ঢুবে যায়। এ নিয়ে জনমনে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো সাম্ভব্যতা যাচাই না করে ধানী মাঠে অযথা এই পুকুর পুনঃখনন সরকারী অর্থের অপচয় বই কিছু নয়। কারণ এই পুকুর পুনঃখনন করা হলে কৃষকের কোনো উপকার তো আসবেই না। বরং জলাবদ্ধতা সৃষ্টির ফলে প্রায় শত একর তিন ফসলী জমি অনাবাদি হবার পাশাপাশি, সরকারের বিপুল অর্থের অপচয় হবে।

জানা গেছে, গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুল ইউপির ১২৪ নম্বর আলোকছত্র মৌজায় ৪১৬ নম্বর দাগে অবস্থিত গভীর নলকুপ স্কীমের মধ্য একটি খাস পুকুর রয়েছে। এদিকে শ্রেণী পুকুর হলেও পলী মাটি জমে ভরাট হয়ে তা কৃষি জমিতে পরিণত হয়েছে। এলাকার কৃষকেরা দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে সেটি কৃষি জমি হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল । কিন্তু বিএমডিএ কৃষকদের ক্ষতির কথা বিবেচনা না করে সেটি সংস্কার করা মানেই সর্বনাশ ডেকে আনা ।স্থানীয় ইউপি সদস্য পুকুর খননের কাজ বন্ধের দাবি করেন।

সরেজমিন ২৭ জানুয়ারী বৃহস্প্রতিবার দেখা যায়, পুকুর পাড়ে বসে কৃষকেরা বিলাপ করছে। গভীর নলকুপ অপারেটর আলতাব স্কীমের কৃষক আজিজুল ইসলাম, আনসার আলী, কাইয়ুম ও সাহিন মাস্টারসহ একাধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, এই পুকুর সংস্কার কাজের জন্য ঠিকাদারের লোকজন সেচ বন্ধ করে দেয়ায় পুকুর পাড়ের প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপনের জন্য সেচ দিতে পারছেন না।ফলে জমিতে সেচ দিলে গভীর নলকুপের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দিচ্ছেন ঠিকাদার রাজশাহী সাগরপাড়ার গোলাপ হোসেন। তারা বলেন, বিলের পানি প্রবাহের পথে পুকুর খনন করা হলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টির ফলে প্রায় শত একর ফসলী জমি অনাবাদী হয়ে পড়বে। যার প্রমাণ কৃষি জমি বাঁচাতে এর পাশেই বিলের খননকৃত পুকুর ফের ভরাট করা হচ্ছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে রিশিকুল ইউপির চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম টুলু বলেন, তিনি কৃষকের মুখে শুনেছেন, পুকুর তো কৃষি জমিতে পরিণত হয়েছে, এটা পুনঃখননের কোনো মানেই হয় না। যেখানে প্রয়োজন সেখানে নাই, অপ্রয়োজনীয় জায়গায় পুকুর বন্ধ করে প্রয়োজনীয জায়গায় খননের দাবি করেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে বিএমডিএ কাঁকনহাট জোনের সহকারী প্রকৌশলী বলেন, এটা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত এখানে তার বলার কিছু নাই। এবিষয়ে ঠিকাদার গোলাপ বলেন, তারা সেচ বন্ধ করতে বলেননি। তিনি বলেন, তারা পুকুর পুনঃখননের কাজ নিয়েছেন, এর সুবিধা-অসুবিধা দেখার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। আমি কেন পানি বন্ধ করতে বলব। তারা ইচ্ছে করলে পানি দিতে পারেন বলে জানান তিনি।

তবে ওই গভীর নলক‚পের ক্যাসিয়ার মাইনুল জানান একাধিকবার বলেও ঠিকাদার জমিতে পানি দিতে দিচ্ছেনা। পানি দিলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিবেন বলে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন।গত প্রায় দশ দিন আগে কৃষকরা জমি রোপন করে ফেলেছে। বাকি ৩০ বিঘা পড়ে আছে।তিনি আরো জানান আগেই জমি রোপন করে।কারন টানা পানি হলেই বন্যা শুরু হয় এই সব জমিতে।

স্ব.বা/

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *