মোদিকে তুলোধুনো করলেন মনমোহন সিং

আন্তর্জাতিক লীড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাঞ্জাবের নির্বাচনের আর মাত্র দু’দিন বাকি, তার আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকারের বিরুদ্ধে বিরল এবং তীব্র ভাষায় তোপ দেগেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে এখনও প্রত্যেকটি সমস্যার জন্য দায়ী করায় মোদির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পদটির বিশেষ মর্যাদা আছে।’

৮৯ বছর বয়সী মনমোহন সিং বলেন, রাজনৈতিক ফায়দা লাভ অথবা সত্য আড়াল করার জন্য কংগ্রেস কখনোই ভারতকে বিভক্ত করেনি। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, একদিকে মানুষ মূল্যস্ফীতি এবং বেকারত্বের মতো সমস্যায় ভুগছেন, অন্যদিকে বর্তমান সরকার গত সাড়ে সাত বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার পরও তাদের ভুল স্বীকার এবং সেগুলো শোধরানোর চেষ্টা করেনি। জনগণের ভোগান্তির জন্য এই সরকার এখনও প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দায়ী করছে।

মনমোহন বলেন, আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রী পদের একটি বিশেষ তাৎপর্য আছে। নিজের দোষ আড়াল করার জন্য ইতিহাসকে দায়ী করার বদলে মর্যাদা ধরে রাখা উচিত প্রধানমন্ত্রীর। আমি ১০ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন আমার কাজের মাধ্যমে কথা বলেছিলাম। বিশ্বের সামনে দেশের মর্যাদা কখনো নষ্ট হতে দিইনি। আমি কখনোই ভারতের গৌরব ক্ষুণ্ন করিনি।

দুই বারের এই প্রধানমন্ত্রী দেশটির বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) চীনের অনুপ্রবেশের ঘটনা নিয়ে লুকোচুরির অভিযোগ তুলেছেন। ডা. সিং বলেন, তাদের (বিজেপি-নেতৃত্বাধীন সরকার) অর্থনৈতিক নীতি সম্পর্কে কোনও ধরনের বোঝাপড়া নেই। এই সংকট শুধুমাত্র দেশের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। এই সরকার পররাষ্ট্র নীতিতেও ব্যর্থ হয়েছে। চীন আমাদের সীমান্তে বসেছে এবং সরকার এটি আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমি আশা করছি, প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন যে, নেতাদের জোর করে জড়িয়ে ধরে, দোলনায় দোল খাওয়া অথবা বিরিয়ানি খাওয়ানোর মাধ্যমে পররাষ্ট্রনীতি চলতে পারে না।

দেশটির বিজেপি-নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া জাতীয়তাবাদী এবং বিভাজনমূলক নীতির’ দায়ে অভিযুক্ত করেছেন মনমোহন সিং। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্রনীতি ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা কখনোই রাজনৈতিক ফায়দা লাভের জন্য দেশকে ভাগ করিনি। আমরা কখনোই সত্য লুকানোর চেষ্টা করিনি। আমরা দেশের অথবা প্রধানমন্ত্রী পদের যে মর্যাদা আছে তা কখনোই ক্ষুণ্ন করিনি। আজ দেশের জনগণ বিভক্ত। এই সরকারের ভুয়া জাতীয়তাবাদ ফাঁপা ও বিপজ্জনক। তাদের জাতীয়তাবাদের ভিত্তি ব্রিটিশদের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল।’ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল করে ফেলা হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *