বিদ্রোহীদের গডফাদার রাব্বানী মামুনের গোমর ফাঁস পালিয়ে রক্ষা পিটুনি!

রাজশাহী

সারোয়ার হোসেন, তানোর: শতবর্ষ রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান গোলাম রাব্বানী ও ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা ত্যাগী নাম ভাঙ্গানো বাটপার মামুনের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটতে চলেছে। রাব্বানী মামুনের রাজনীতির আড়ালে যত অপকর্ম লুকিয়ে রাখা হয়েছিল তস এখন ধীরে ধীরে ফাঁস হয়ে পড়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী ও মামুন এতোদিন তানোরের তৃণমূল নেতাকর্মীদের চোখে রঙিন চশমা পরিয়ে যত অপকর্ম করেছে তার এখন তৃণমূল নেতাকর্মী সমর্থকদের কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে।

এরা নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নিজেদের কে আওয়ামী লীগ দাবি করেন। নিজের স্বার্থের জন্য নৌকা কেন দলের সাথেও গাদ্দারি করতে বাঁধেনা রাব্বানী মামুনের। তাদের জায়গা আওয়ামী লীগে হতে পারে না।

যারা মুখে আওয়ামী লীগ আর ভিতরে মুশতাক। এসব আওয়ামী লীগের দরকার নেই। যারা রাজনীতিকে পেট নীতি মনে করেন তাদের পদে থাকার কোন যোগ্যতা নেই, ওরা রাজনীতির হিমঘরে অবস্থান করছে বলে অভিমত রাজশাহীর তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃনমুলের নেতাকর্মীদের।

আগামী ১৬ জুন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। অথচ সম্মেলন নিয়ে বিদ্রোহের মদদদাতা বিতর্কিত সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বিভ্রান্তে পড়ে রয়েছে বলে মনে করছেন তৃনমূল আওয়ামী লীগ। তারা স্হানীয় এমপির সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে এবং সরাসরি নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে রাজনীতির অন্ধকার। আবার তারাই নাকি ত্যাগী আওয়ামী লীগ। এটা অবশ্য ফেলার মত না। কারন নিজ দলকে ত্যাগ করলে ত্যাগী তো হবেই। তাছাড়া ভাইকে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা না পেয়ে ত্যাগ করে ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতীকে ভোট যুদ্ধে নামিয়েছিলেন। এটাতো কম বড় ত্যাগ না বলেও মত সিনিয়র নেতাদের।

দলীয় সুত্রে জানা গেছে, বিগত ২০০১ সালে প্রথমবারের মত জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় শহীদ পরিবারের বরেন্দ্র ভুমির পোড়া মাটির সন্তান শিল্পপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। যদিও ওই নির্বাচনে পরাজিত হলেও আগামী দিনের রাজনীতির নেতৃত্ব তিনি দিবেন সেটা জানান দিয়েছিলেন। তানোর গোদাগাড়ী উপজেলার গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পড়ায় হাটিহাটি পাপা করে হারিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ পুনঃ জাগরণ সৃষ্টি করতে সক্ষম হন। এদুই উপজেলায় দেশ স্বাধীন পরবর্তী সংসদ ছিলেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচ এম কামারুজ্জামান। দীর্ঘ সময় পর বিগত ২০০৮ সালে জাতীয় নেতার যোগ্য অনুসারী ভাগ্নে ওমর ফারুক চৌধুরী উদ্ধার করেন। ধীরে ধীরে রাজনীতির প্রেক্ষাপট বদলে যায়। আওয়ামী লীগের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনেন তিনি। যা কেন্দ্র থেকে শুরু করে দেশরত্নও অবহিত।

সুত্র মতে, সংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর সাংগঠনিক দৃঢতার জন্য প্রথমে জেলার সাধারণ সম্পাদক এবং পরে সভাপতি হন তিনি। শুরু হয় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তাঁকে হেয় করতে মরিয়া হয়ে সেভেন স্টার থেকে শুরু করে কিনারা হীন এক নেতার নানা প্রতিপক্ষ তৈরি করেন। আজ তারা রাজনীতির অন্ধকার খোয়াই নিমজ্জিত। গত জাতীয় নির্বাচনে সংসদ কে ঠেকাতে নামিয়ে দেওয়া হয় বর্তমান সভাপতি তৎকালীন মুন্ডুমালা পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানী কে। ব্যর্থ হয়ে এক ঘরে হয়ে পড়েন রাব্বানী। ওই সময় এমপির খোয়াবের স্বপ্নে পৌরসভা থেকে লুট করা টাকার ছড়াছড়ি।

জানা গেছে, রাব্বানী এমপি হওয়ার দিবা স্বপ্নে মুন্ডুমালা পৌরসভায় মেয়র পদে ভোটও করেন নি। আর এটাকেই তার রাজনীতির বড় পতন বলেও মনে করছেন। বিগত ২০০৯ ও ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে রাব্বানীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বিদ্রোহ করায় নির্বাচিত হতে পারেনি। গত ২০১৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে মামুন নৌকা না পেয়ে বিদ্রোহ করে রাব্বানীর অনুসারী বনে যান। অথচ তার আগে রাব্বানীকে গালি দিয়ে বক্তব্য দিতেন। আর ওই মামুন এখন রাব্বানীর পক্ষের নাম্বার ওয়ান ষড়যন্ত্র কারী। পাক্কা খেলোয়াড় এই মামুন। ভয়ংকর রুপে বিদ্রোহ করেন রাব্বানী মামুন। গত পৌর ও ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ তাদের। প্রতিটি নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী দেন তারা। আর বসে থাকেন শহরে। একেক জন বিদ্রোহী প্রার্থীকে পথে বসিয়ে দিয়েছেন। কারন একটাই কিভাবে এমপি উপজেলা চেয়ারম্যান কে বেকায়দায় ফেলা যায়। কিন্তু সাংসদ ও চেয়ারম্যান কখনো নৌকার বিরুদ্ধে না, সব সময় নৌকার জন্য অবিচল পরিক্ষিত ভূমিকায়। যার কারনে রাজনীতির সফলতায় সংসদ। যারায় ষড়যন্ত্র বিদ্রোহ করেছেন তারায় রাজনীতির হিমঘরে।

রাব্বানীর এক ঘনিষ্ঠ সহচর জানান, সম্মেলনের ব্যাপারে রাব্বানী মামুনের তেমন মাথা ব্যথা নাই। কারন যে কেন্দ্রীয় নেতা সম্মেলনের দায়িত্বে তাকে বুকিং করা হয়েছে। এখন নারায়নের বিনিময়ে সব কিছু। এজন্য রাব্বানী সফরে। অবশ্য এই সহচর রাব্বানী পুনরায় দায়িত্বে থাকছেন। তবে মামুনের বিষয়ে কিছুই বলতে পারেন নি।

জেলা আওয়ামী সহসভাপতি বর্ষিয়ান রাজনীতি বিদ শরিফ খান, ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন দীর্ঘ প্রায় নয় বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সম্মেলন। অথচ বিদ্রোহী মদদদাতা সভাপতি রাব্বানী ও সম্পাদক মামুনের কোন কিছুই লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। আসলে দলের সাথে নিজেদের স্বার্থে পকেট ভরাতে বিদ্রোহ করলে এমন অবস্থায় হয়। এসবের অবসান ঘটিয়ে আগামী ১৬ জুন আওয়ামী লীগের নতুন দিগন্ত শুরু হবে বলে এই প্রবীণ নেতার একান্ত দাবি।

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *