বাঘায় খরায় পুড়ছে ক্ষেতের পাট-ভুট্টা, বিপাকে চাষিরা

কৃষি রাজশাহী লীড

বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায় ফসল নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষীরা । শতশত বিঘা জমিতে আবাদ করা পাট ও ভুট্টা রোদে পুড়ে নষ্ট হয়ে হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোন পানি নেই যেখানে চাষিরা পাট জাগ দিয়ে ফসল রক্ষা করবেন। যার ফলে খরায় পুড়ে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে আবাদি ফসল। ভাড়া করা গর্তে পাট জাগ দিলে লোকসান গুনতে হবে বলে জানিয়েছেন চাষীরা ।

সোমবার (১৮জুলাই) সরেজমিন পদ্মার চরে গিয়ে দেখা যায়, শতশত বিঘা জমিতে আবাদ করা পাট ও ভুট্টা রোদে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও কোন পানি নেই যেখানে চাষিরা পাট জাগ দিয়ে ফসল রক্ষা করবেন। যার ফলে খরায় পুড়ে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে আবাদি ফসল। ভাড়া করা গর্তে পাট জাগ দিলে লোকসান গুনতে হবে চাষিদের ।

চলতি মৌসুমে জমি বর্গা নিয়ে তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন, বাঘার কালীদাশখালী চরের আশরাফুল ইসলাম। অনাবৃষ্টি আর প্রচন্ড খরতাপে জমির বেশিরভাগ পাটগাছ পুড়ে মরে যাচ্ছে তার। প্রচন্ড খরতাপে জমির পাট মরে নষ্ট হলেও পানির অভাবে পাট কেটে জাগ দিতে পারছেন না। বৃষ্টি না হওয়ায় আশরাফুল ইসলামের পাট ক্ষেতের মতো খরতাপে পুড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ক্ষেতের ভুট্টাও । ২০ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন কালীদাশখালী চরের কামরুল ইসলাম । তার আবাদ করা জমির অধিকাংশ ভুট্টা রোদে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আবাদে এবার খরচ উঠবে না। খরায় সর্বনাশ হয়ে গেছে।

রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার চরে রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে শত শত বিঘা জমিতে আবাদ করা পাট ও ভুট্টা। ভালো দামের আশায় পাট ও ভুট্টার আবাদ বাড়লেও পানির অভাবে মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের।

কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে,উপজেলায় চার হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মার চরেই আবাদ হয়েছে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর।উপজেলায় ১১৭ হেক্টর ভুট্টার আবাদের মধ্যে পদ্মার চরে আবাদ হয়েছে ৫০ হেক্টর।

চাষিরা জানান,বছরে তিনবার ভুট্টার আবাদ হয়। বিঘাপ্রতি উৎপাদন হয় ২৫-৩০ মণ । এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদন হয় ১০-১২ মণ । পাট চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৮-১০ হাজার টাকা। ভূট্টাচাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় প্রায় ৮ হাজার টাকা । একবার সেচ দিলে বিঘাপ্রতি খরচ হয় এক হাজার টাকা।

চাষি কামরুল ইসলাম বলেন, শতশত বিঘা জমিতে আবাদ করা পাট ও ভুট্টা রোদে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও কোন পানি নেই যেখানে চাষিরা পাট জাগ দিয়ে ফসল রক্ষা করবেন। যার ফলে খরায় পুড়ে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে আবাদি ফসল। ভাড়া করা গর্তে পাট জাগ দিলে লোকসান গুনতে হবে চাষিদের ।

উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় বৃষ্টি না থাকায় মাঠে রোপণ করা পাট ও ভুট্টা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন পাট জাগ দেওয়ার জন্য বৃষ্টির প্রয়োজন। কিন্তু পাট জাগ দেওয়ার পানির সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। সেচের পানিতে পাট জাগ দিতে গেলে চাষিদের অনেক টাকা খরচ হবে।

স্ব.বা/ম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *